মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর প্রতিবাদে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন কুতুবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনিরুল আলম সেন্টু। সোমবার (২৯ জুলাই) রাত ১০টায় কুতুবপুরের পাগলার দেলপাড়া স্কুলের একটি অফিস কক্ষে তিনি এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
কুতুবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সেন্টুকে নিয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ জসীম উদ্দিনের বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পর জেলাজুড়ে এ নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা।
সংবাদ সম্মেলনে কুতুবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনিরুল আলম সেন্টু বলেন, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট ও অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। আমি গত ঈদুল আযহার ১দিন পর দেশের বাইরে আমেরিকাতে যাই। আমি দেশে ফিরেছি গত ১৬ জুলাই দিবাগত রাতে। আমি জানতাম না দেশে যে, এতবড় অরাজকতা-তান্ডব চলতেছে। যাইহোক গন্ডগোলের মধ্যে আমি দেশে আসি। এমতাবস্থায় আমার বিরুদ্ধে কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জসিম উনি আমার বিরুদ্ধে হঠাৎ করেই সংবাদ দিয়ে দেয় আমি নাকি ‘জ্বালাও-পোড়াও নাশকতা করতে আমি নাকি ৫ লাখ টাকা দিয়েছি। আসলে ২০২১ সালে এমপি শামীম ওসমান সাহেব আমাকে নৌকা দিয়ে দলে নিয়ে আসেন। এরপর থেকে আমি সবসময় চেষ্টা করেছি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সম্মান-ভাবমূর্তি ও আমাদের এমপি সাহেবের সম্মান যেন ক্ষুন্ন না হয়।
এসময় তিনি বলেন, আপনারা জানেন, এই অঞ্চলে মাদক এবং সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য তৈরি হয়েছে। যারা এই কাজগুলো করতেছিলো, আমি তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছি। যাতে করে দলের সম্মান ও এমপি সাহেবের সম্মান ক্ষুন্ন না হয়। এরআগে এইকথা আমি এমপি সাহেবকেও বলেছি যে, আমাদের এইসব এলাকাগুলোতে মাদকের ছড়াছড়ি, তাছাড়াও বিভিন্ন লোক বাড়ি-ঘর তৈরি করতে গিয়ে অনেক বিপদগ্রস্থ হয়, চাঁদা দিতে হয়। আমি নিজেও অনেক জায়গায় তাদের বিরুদ্ধে অনেক জায়গায় প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ করেছি। সেই ক্ষোভ থেকে তারা আমার বিরুদ্ধে এই সময় আমাকে বিপদগ্রস্থ করার জন্য, আমার মানসম্মান নষ্ট করার জন্য, আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এবং দলের থেকে আমাকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য আমার বিরুদ্ধে এই ধরনের অপপ্রচার করছে। আমি প্রতিবাদ না শুধু, আমি চ্যালেঞ্জ করলাম। যদি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জসিম এর প্রমাণ দিতে পারে তাহলে যা শাস্তি আছে আমি মাথা পেতে নিবো।
তিনি আরো বলেন, আমি আপনাদের কাছে বিচার দিলাম এবং এমপি সাহেবের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি যে, অবশ্যই এটা প্রমাণ করা উচিত, প্রমাণ করতে হবে। এইযে আমার বিরুদ্ধে তারা একটা অপপ্রচার করলো। যেদিন সে এই ধরনের বক্তব্য দেয় সেখানে আমাদের থানা আওয়ামী লীগের জয়েন্ট সেক্রেটারি (যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক), আমাদের (কুতুবপুর) ৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত ছিলো তারা সাথে সাথে সেখানে প্রতিবাদ করেছিলো। একটা গ্রুপ যারা এই দলের নাম ভাঙ্গিয়ে যারা এখানে অসামাজিক কার্যকলাপ, চাঁদাবাজি এবং মাদক ব্যবসা করছে, যাদেরকে আমি প্রতিরোধ করেছি বারবার। আমি মনে করি, তাদের প্ররোচনায় পড়ে সে আমার বিরুদ্ধে এই ধরনের কথা বলছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি এখনো কোন আইনী পদক্ষেপ নেই নাই। আমি আজকেই প্রথম হঠাৎ করে পত্রিকা পড়ে তাৎক্ষণিকভাবে আমি মনে করলাম যে, এইটার প্রতিবাদ বা প্রতিরোধ করা উচিত। তা নাহলে আমি যদি নিরব থাকি, তাহলে অনেকেই বলবে আমি কেন নিরব! সাংবাদিকদের আরেকটি প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি বিভিন্ন সময় তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ করার কারণেই আমার বিরুদ্ধে তারা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে।
উল্লেখ্য, ফতুল্লার কুতুবপুর ইউনিয়নের চিতাশাল এলাকায় গত ২৮ জুলাই স্থানীয় আওয়ামী লীগের কর্মীসভায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ জসীম উদ্দিন তার বক্তব্যে বলেন- ‘জ্বালাও-পোড়াও, নাশকতা করতে ৫ লাখ টাকা দেন চেয়ারম্যান সেন্টু’ এই সংবাদটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে বক্তব্যটি নিয়ে জেলাজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...