কলকাকলী মুখর হয়ে উঠুক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
  1. rakibchowdhury877@gmail.com : Narayanganjer Kagoj : Narayanganjer Kagoj
  2. admin@narayanganjerkagoj.com : Narayanganjer Kagoj : Narayanganjer Kagoj
কলকাকলী মুখর হয়ে উঠুক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১০:৪১ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে ওসমান পরিবারের আলোচিত বায়তুল আমান ভবন জেলা বিএনপির আহবায়ক মামুন মাহমুদকে কুতুবপুর শ্রমিক দলের ফুলেল শুভেচ্ছা ইজিবাইকের চালকদের অবরোধে ভোগান্তিতে নগরবাসী মানুষের ভোটাধিকার এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি : মামুন মাহমুদ রূপগঞ্জে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে দুই কিশোর নিহত সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের ওপর হামলা হাসিনা ও ছাত্রলীগ এখন ডেথ চ্যাপ্টার : হাসনাত আবদুল্লাহ নিজেকে ‘লক্ষ্মীপেঁচা’ বলে উপস্থাপন করলেন পরীমনি জাম্পিং করতে গিয়ে খাদে পড়লেন নোরা ফাতেহি নারায়ণগঞ্জে স্বামীর গোপনাঙ্গ কর্তন করল স্ত্রী ডাক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ভিক্টোরিয়ায় দুদকের অভিযান সরকারি জমি দখল করে বিএনপির কার্যালয় : দুই গ্রুপের উত্তেজনা! বক্তাবলীতে দুটি অবৈধ ইটভাটা বন্ধ, ২ লক্ষ টাকা জরিমানা সোনারগাঁয়ে পুলিশের অভিযানে ডাকাত সাদ্দাম গ্রেপ্তার কাভার্ডভ্যানের চাপায় বাবা নিহত, ছেলে আহত

কলকাকলী মুখর হয়ে উঠুক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

নারায়ণগঞ্জের কাগজ ডেস্ক
  • প্রকাশিত সময় : শনিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২১
কলকাকলী মুখর হয়ে উঠুক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

কবির কথা দিয়ে শুরু করছি, “ধূসর মরুর উসর বুকে দশটি যদি শহর গড়, একটি জীবন সফল করা তার চেয়ে অনেক বড়।” মানুষ সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব। আশরাফুল মাখলুকাত। কিন্তু এই মানব জীবন নিয়ে আমরা কে কতটা চিন্তা করছি। মানুষ তার নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত। সারা বিশ্বের মানবজাতিকে নিয়ে কয়জন ভাবছেন? যারা সারা বিশ্বের মানুষকে নিয়ে ভাবেন, তারা মানুষ নন, তারা মহামানব। শিক্ষা মানুষের অন্তরের মনুষ্যত্বকে বিকশিত করে। শ্রেষ্ঠ মানুষ গড়ার শ্রেষ্ঠ স্থান হচ্ছে পরিবার-পরিবেশ সর্বোপরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ অনেক ক্ষেত্রেই জেলখানার রূপ নিচ্ছে। সেখানে না আছে মুক্ত পরিবেশ, না আছে খেলার মাঠ। বন্দিদশায় আমাদের সন্তানরা লেখাপড়া করছে। গত দুই বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ বন্ধ। সম্প্রতি ঘড়ি ধরে পুঁথিগত শিক্ষা দেয়া হচ্ছে। মুক্ত পাখিকে খাঁচায় বন্দী করে তোতা বলি শেখানো হচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অতীতে এলাকার শিক্ষিত ধর্নাঢ্য সম্ভ্রান্ত পরিবারের শিক্ষিত সদস্যরা শিক্ষকতা করতেন। কালের বিবর্তনে কি দেখছি, যার নাই কোন গতি তিনি করেন পন্ডিতি। বর্তমানে বেশ ব্যতিক্রমী হচ্ছে । শিক্ষিত যুবক-যুবতীরা বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে ইংরেজি শিক্ষায় জোর দিয়ে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক ভাষা শিক্ষায় বাধা নেই। কিন্তু মাতৃভাষার প্রতি তেমন গুরুত্ব লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। মাতৃভাষার প্রতি দরদ থাকা চাই। দেশ ও দেশের ভাষা মায়ের সমান। মায়ের ভাষার জন্য যে জাতি প্রাণ দিয়ে বিশ্বের ইতিহাসের পাতায় নাম লিখেছে। সেই জাতি তার মায়ের ভাষার মূল্য দিতে এত কৃপণতা কেন? বাংলা ভাষার ব্যাকরণ শিক্ষায় মন্থর গতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কথায় আছে যে না জানে ব্যাকরন, তার বিদ্যা অকারণ। বিষয়গুলো দেশের বৃদ্ধ সমাজ মূল্যায়ন করবেন। শিক্ষা যেমন মানুষের মনের মানসিকতার প্রসার ঘটায়, খেলাধুলা তেমন দৈহিক গঠন ও মেধা-মননের সহায়ক।

বঙ্গবন্ধুকন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি শিক্ষার পাশাপাশি খেলাধুলারও যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খাতে মুক্ত পরিবেশে ছাত্রছাত্রীদের মানসিক বিকাশ ঘটে তার জন্য উপবৃত্তি সহ নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা প্রদান করেছেন।

পূর্বে এলাকার ধর্নাঢ্য ব্যক্তিবর্গ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, খেলাধুলার মাঠ, পুকুর খনন ও পানীয় জলের ব্যবস্থা করতেন। বর্তমানে একশ্রেণীর মানুষ তার বিপরীতে অবস্থান করে আত্ম স্বাথরক্ষায় ব্যস্ত। সরকারি অথবা খাসের জমিজমাতে গ্রামের শিশু-কিশোররা খেলাধুলা করত। বর্তমানে সেইসব জমিজমা প্রভাবশালী মহল দখল করে নিচ্ছে। গ্রামে-গঞ্জে এমনকি অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাঠ না থাকায় উঠতি বয়সি কিশোররা খেলাধুলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়ে বিপথগামী হচ্ছে। তাদের নৈতিক অবক্ষয় ঘটছে। আগামী প্রজন্মের প্রতি অনেকেই আশাহত হচ্ছেন। একটি স্থানীয় দৃষ্টান্তের কথা বলছি, আগামী প্রজন্মের কিশোর-কিশোরীরা যাতে উচ্ছন্মে না যায়, তার জন্য আলীগঞ্জবাসী দীর্ঘ সংগ্রাম করে একটি মাঠ রক্ষা করেছেন। আর এই সংগ্রামের অগ্রনায়ক ছিলেন শ্রমিক নেতা কাউসার আহমেদ পলাশ। মাঠ রক্ষায় তার অনেক ত্যাগ সহ্য করতে হয়েছে। এই ত্যাগী নেতার পিছনে বেশকিছু প্রগতিশীল ব্যক্তিবর্গও ছিলেন। সরকার জনগণের চাহিদার মূল্য দিয়েছেন এজন্য ধন্যবাদ। জনগণের সরকার সব সময় জনগণের চাহিদার মূল্য দিয়ে থাকেন। জনস্বার্থে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হয়। তবে দেশ ও সমাজের উন্নয়ন সম্ভব।

যে স্বপ্ন বুকে নিয়ে ৩০ লাখ মানুষ প্রাণ দিল আড়াই লাখ মা-বোন লাঞ্ছিত হল। স্বাধীনতার আজ ৫০ বছর। এই ৫০ বছরে হাজার হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। দেশ অর্থনৈতিক উন্নয়নের মানদন্ডের সিঁড়িতে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু এ ৫০ বছরে কতজন ড. শহিদুল্লাহ, হুমায়ন আহমেদ, ড, আশরাফ সিদ্দিকী, ড. সৈকত আজগর, রফিকুল ইসলাম ও ড. করুণাময় গোস্বামী সৃষ্টি হয়েছে তার হিসেব দেবে।

ছাত্র-ছাত্রীরা আমাদের জাতির আশা ভরসার স্থল। সেইসব আশার প্রদীপ গুলো দীর্ঘ দুই বছর প্রায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বিচ্ছিন্ন। কঠিন করো না শুধু আমাদের নয় সারা বিশ্বের উন্নয়নের চাকা স্তব্ধ করে দিয়েছে। আমাদের ছাত্র-ছাত্রী জ্ঞান লাভের জন্য করোনা হাতে প্রাণ যাক তা কারো কাম্য নয়। শিক্ষামন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিতে হয়। তিনি সঠিক সিদ্ধান্তে মাতৃস্নেহের দাবি নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেন।

বর্তমানে পরিস্থিতি অবলোকন করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষার্থীদের টিকা প্রদান পূর্বক পরীক্ষা নিচ্ছেন। সময় বসে থাকে না। কিন্তু সময়ের চেয়ে জীবন মূল্যবান। জীবন গড়ার ইচ্ছায় অভিভাবক শ্রেণি ও তাদের সন্তানদের প্রতি যথেষ্ট যতœবান হবেন এটাই আমাদের সবার প্রত্যাশা। আপনার সন্তান মানে আমার দেশের সন্তান। আমাদের আগামী দিনের আশা-ভরসার প্রদীপ। প্রদীপ গুলোর প্রতি আমাদের যথেষ্ট আন্তরিক হওয়া উচিত। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ায় ছাত্রসমাজ যথেষ্ট ভূমিকা রাখবে। অতীতে স্বাধীনতা আন্দোলনে ছাত্র সমাজের ভূমিকা স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে। ছাত্রদেরকে জাতি স্নেহ আদর এমনকি সম্মান করেন। ছাত্র এবং শিক্ষক শব্দটির মাঝে কেমন জানি একটা শ্রদ্ধাভক্তি লুকিয়ে রয়েছে। আপনা-আপনি মাথা নত হয়ে আসে।

সেই শ্রদ্ধা ধরে রাখতে হলে নিজেদের সম্মান নিজেদের রক্ষা করা কর্তব্য। ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে কারো রাজনীতি করা উচিত নয়। জাতির বৃহত্তর স্বার্থে ছাত্র-ছাত্রীরা রাজপথে তাদের ত্যাগের প্রমাণ দিয়েছে। বর্তমানে দেশে হঠাৎ করে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে বাস চলাচল বন্ধ। পরিবহন ধর্মঘট, সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে বাস ভাড়া বৃদ্ধি করে নিয়েছে বাস মালিক পরিবহন শ্রমিকবৃন্দ।

এক জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে দেশের সর্বত্র মূল্যবৃদ্ধির ঝড় উঠেছে। বাস ভাড়া বাসা ভাড়া কোনটাই মূল্যবৃদ্ধিতে বাদ যায়নি। বাজারে যেন মূল্যবৃদ্ধির আগুন। রাবণের চিতার ন্যায় সব গরম চলছে। যা একবার বৃদ্ধি হয় তার আর মূল্য হ্রাসের নাম গন্ধ নেই। ছাত্র-ছাত্রীদের গণপরিবহনে হাফ ভাড়ার দাবিতে বিভিন্ন শহরে বিশেষ করে রাজধানীতে ছাত্রদের বিক্ষোভ দেখা গেছে। ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১৩ লাখ ৯৯ হাজার ৬৯০ জন এইচএসসি পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। এইচএসসি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে পরিবেশে হোক এ আমাদের প্রত্যাশা। রাজপথে আমাদের ছাত্র-ছাত্রী যেন কষ্ট না করে। ছাত্রদের মধ্যে অছাত্র সুলভ কেউ আশা করে না। বাসে অগ্নিসংযোগ। যে আগুন দেখে সমগ্র দেশবাসী আতঙ্কিত। জাতীয় সম্পদ ধ্বংস কারো কাম্য নয়। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, রাস্তায় নেমে গাড়ি ভাংচুর করা ছাত্রদের কাজ নয়। অপরদিকে তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, ছাত্র আন্দোলনের ওপর ভর করে একটি মহল ছাত্রদের গায়ে কালিমা লেপন করছে। তিন-চারদিনের বাস ধর্মঘটের ফলে বাস ভাড়া বৃদ্ধি হল কিন্তু ছাত্রদের দাবি হাফ বাস ভাড়া নিয়ে এত নাটক কেন? সুশীল সমাজ বিভিন্ন প্রশ্ন করছেন। এসব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে প্রশ্নকারীদের বুঝাবে কে? যাই হোক ঝড় থেমে যাবে এক সময়। কিন্তু সময় গুলো আর ফিরে পাওয়া যাবে না।

বর্তমান ডিসেম্বর মাস লাখ লাখ শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নতুন করে শপথ নেয়ার সময় এসেছে। মহান বিজয় দিবসের পূর্বাহ্ণে লাল-সবুজ পতাকা তলে দাঁড়িয়ে বিনম্রভাবে গর্বিত অতীতকে স্মরণ করে আগামী দিনের সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার শপথ নিবো। এই হোক বর্তমান প্রজন্মের অঙ্গীকার আগামী দিনের কান্ডারী ছাত্রদের। জানুয়ারি থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতিতে কলকাকলি মুখর হয়ে উঠুক। ফুটুক হাজার ফুলের কলি।

লেখক-
রণজিৎ মোদক
শিক্ষক, সাংবাদিক ও কলামিস্ট
ফতুল্লা, নারায়ণগঞ্জ।

নিউজটি শেয়ার করুন :

আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..