1. rakibchowdhury877@gmail.com : Narayanganjer Kagoj : Narayanganjer Kagoj
  2. admin@narayanganjerkagoj.com : Narayanganjer Kagoj : Narayanganjer Kagoj
সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৮:০৫ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
আজকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মৃত্যুর মুখে : সালাম দেওভোগে ড্রেন থেকে ইঞ্জিন মিস্ত্রির ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার এই সরকার সেলফি তুলেও রক্ষা পেল না : আজাদ বোতলভর্তি ‘শয়তানের নিঃশ্বাস’ জব্দ, গ্রেফতার ২ নারায়ণগঞ্জের শ্রেষ্ঠ ওসি হলেন গোলাম মোস্তফা সপরিবারে ওমরাহে যাচ্ছেন শামীম ওসমান, চাইলেন ক্ষমা সাবেক আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারীর শ্বশুরের ইন্তেকাল চেয়ারম্যান স্বপনের মৃত্যুতে সদর থানা কৃষকলীগের শোক-সমবেদনা স্বপন চেয়ারম্যানের মৃত্যুতে ফরিদ আহম্মেদ লিটনের শোক প্রকাশ না ফেরার দেশে ফতুল্লা ইউপির চেয়ারম্যান স্বপন ফতুল্লা প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন : সভাপতি রহিম, সম্পাদক মাসুম ও সাংগঠনিক লিটন ফতুল্লায় ব্যবসায়ীর পিকআপ গাড়ি চুরি, থানায় অভিযোগ বক্তাবলীতে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া বিএনপি থেকে আরও বহু লোক বেরিয়ে আসবেন : শামীম ওসমান সাইনবোর্ডে সড়ক দুর্ঘটনায় ২ জনের মৃত্যু

বিএনপি কি রাজনীতিতে সক্রিয় হতে পারবেন?

মোঃ মনির হোসেন
  • প্রকাশিত সময় : সোমবার, ৯ নভেম্বর, ২০২০
  • ৭৫৫ বার পঠিত
বিএনপি কি রাজনীতিতে সক্রিয় হতে পারবেন?

‘জন্মের পর সবচেয়ে কঠিন সময় পার করছে বিএনপি। দলের নেত্রী সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নামে অনেকগুলো মামলা। রায় হয়েছে, সাজা হয়েছে। কারাগারে ছিলেন, জামিনে মুক্ত হয়ে এখন গৃহ অন্তরীণ। শারীরিকভাবেও অসুস্থ। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লন্ডনে’।

অতীতে আমরা দেখেছি, একটা রাজনৈতিক দলের জনভিত্তি গড়ে তুলে বৃহৎ রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে গেলে অনেক কঠিন পথে চলতে হয়। অনেক বিপদ, অনেক সংকট, অনেক চড়াই-উৎরাই পার হতে হয়। তা যেমন রাজনৈতিক দলকে ভেতরে ভেতরে শক্ত করে তেমনি জনগণের হৃদয়েও জায়গা তৈরি করে দেয়। দলের নেতাকর্মীরাও এই কঠিন পথে হেঁটে একধরনের রাজনৈতিক নির্বাণ লাভ করে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তার রাজনৈতিক যাত্রাপথে এরকম পথপরিক্রমায় সিদ্ধি লাভ করেছে। বিপদের দিনে উঁচুতলার নেতারা পা পিছলে পড়লেও তৃণমূলের নেতাকর্মীরা পথভ্রষ্ট হয়নি। এবং সেটাই আওয়ামী লীগকে আজকের এই শক্তিমত্ত অবস্থায় এনেছে। বিএনপির জন্যও এখন সেরকম পরীক্ষার দিন উপস্থিত হয়েছে। দেখার বিষয় বিএনপির তৃণমূলের শক্তি বিপদের দিনে উঁচুতলার নেতাদের পথ দেখাতে পারে কিনা!

আওয়ামী লীগ, যার জন্ম ১৯৪৯ সালে আওয়ামী মুসলিম লীগ হিসেবে। আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছিল পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বাঙালিদের শোষণের প্রতিবাদের একটি রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে। দলটি পাকিস্তান আমলে নিষিদ্ধ হয়েছে একাধিকবার, দলে ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে কমপক্ষে তিনবার, আবার সেই দল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছে, স্বাধীনতার পর রাষ্ট্রক্ষমতায় গেছে আর সাড়ে তিন বছরের মাথায় এক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা হারিয়েছে আর ষড়যন্ত্রকারীদের হাতে রাষ্ট্রের জন্মদাতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হয়েছেন, কারা অভ্যন্তরে হত্যা করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনাকারী জাতীয় চার নেতাকে।তারপর ও তারা ঘুরে দাড়িয়েছে।

এদিকে দলকে সংগঠিত করার ক্ষেত্রে বিএনপি দক্ষতার পরিচয় দিতে পারছে না। দলটির মধ্যে দ্বিধা ও সংশয় স্পষ্ট। এ কারণেই বিএনপি জনমত সংগঠিত করতে পারছে না। বিএনপি এখন কোনো রকমে টিকে আছে। দলটির জনসমর্থন আছে বিপুল। কিন্তু সাংগঠনিক দক্ষতা ও শক্তি নিঃশেষ প্রায়। শুধু জনসমর্থনের ওপর ভিত্তি করেই কোনো রকমে টিম টিম করে জ্বলছে বিএনপি নামের দলটি। মাঠপর্যায়ে তেমন সাংগঠনিক তৎপরতা নেই। মাঝেমধ্যে কিছু প্রেস রিলিজ পড়তে দেখা যায়। এ ছাড়া আর তেমন কোনো রাজনৈতিক তৎপরতা নেই।

বিএনপির উচিত ছিল দল পুনর্গঠনে মনোযোগ দেওয়া। দলের ভেতর সংস্কার করা। তৃণমূল থেকে নতুন নেতৃত্ব বের করে আনা। তৃণমূলের ক্ষমতায়ন করা। জনগণের আরও কাছাকাছি থেকে রাজনীতি করা। বিএনপিকে জরুরি ভিত্তিতে এসব করা উচিত। অভিজাত, উচ্চশিক্ষিত, বিত্তশালী ব্যবসায়ীরাও বিএনপিতে থাকবেন। কিন্তু একই সঙ্গে সাধারণের কাতার থেকেও উচ্চ পর্যায়ের নেতৃত্বে আনতে হবে। জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর বিএনপি ঘুরে দাঁড়িয়েছিল দুই কারণে। দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আপসহীন নেতৃত্ব এবং ছাত্রদলের জনপ্রিয়তা।

এখন তো বয়স্ক, বিবাহিত ও অছাত্রদের হাতে দিয়ে ছাত্ররাজনীতির ভাবমূর্তিই নষ্ট করে দেয়া হয়েছে। এখানে বিএনপি একার দায় নেই। সব দল মিলেই ছাত্ররাজনীতির সর্বনাশ করেছে। কিন্তু অন্যরা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও বিএনপি ছাত্রদলকে আর ছাত্রদের ধারায় ফিরিয়ে আনতে পারেনি।

সূত্র মতে, ৯০-এর গণ-অভ্যুত্থানের পর দুবার ক্ষমতায় এসে বিএনপি বেশ কয়েকটি ঘটনা সামাল দিতে ব্যর্থ হয়েছে। প্রথমটি হচ্ছে দিনাজপুরে ইয়াসমিন হত্যার বিচারের দাবিতে আন্দোলন। দ্বিতীয়টি হচ্ছে সারের দাবিতে কৃষকের বিক্ষোভ। ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর ফুলবাড়ী কয়লাখনি আন্দোলন ও বিদ্যুতের দাবিতে কানসাট আন্দোলন হয়। এসব আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিক্ষুব্ধ জনতার ওপর গুলি চালিয়েছিল। এসব আন্দোলন তেমন জটিল কিছু ছিল না। কিন্তু জনসাধারণের মধ্যে বিরোধী দলের ছায়া ও ষড়যন্ত্র খোঁজা সমীচীন না। এসব ক্ষেত্রে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কৌশলও অনুসরণ করতে পারছে না। ১৯৭৮ সালে জিয়াউর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন। সেখানে তাঁর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছিল। কিন্তু তিনি মনোযোগ সহকারে সেই বিক্ষুব্ধ ছাত্র ও শিক্ষকদের কথা শুনেছিলেন।

বিএনপির রাজনৈতিক অস্তিত্বের বিষয়টি শুরু হয় ২০১৩ সালে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচন প্রতিহত করতে ব্যর্থ হওয়ার পর, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো আন্দোলন গড়ে তুলতে না পারার ফলে। অনেকেরই সেসময় ধারণা জন্মেছিল, ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন একতরফা নির্বাচন করে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন সরকার যেমন গণ-আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিল, তেমন পরিণতি হয়তো শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারও বরণ করতে যাচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল আওয়ামী লীগ ক্ষমতা গ্রহণের এক বছর পর কিছুদিনের জন্য জামায়াত নির্ভর রাজনীতি ছাড়া বিএনপি আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি।

আর এখন তো বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনীতিতে ফেরা নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে সংশয় দেখা দিয়েছে। কারাগারে যাওয়ার পর দলের অধিকাংশ সিদ্ধান্তের ব্যাপারে অবগত ছিলেন না দলীয়প্রধান। দুই বছরের বেশি সময় জেলে থাকার পর পরিবারের চেষ্টায় চলতি বছরের ২৫ মার্চ শর্তের বেড়াজালে মুক্ত হন তিনি। দলের নেতাকর্মীরা আশা করেছিলেন, দলীয় কার্যক্রমে তিনি ফের সক্রিয় হবেন। কিন্তু সেটা এখন সম্ভব হচ্ছে না, এমনটি মনে করছেন অনেকে।

দলীয় সূত্র মতে, দীর্ঘ সময় রাজনীতিতে বেগম খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতি প্রভাব ফেলছে নেতাকর্মীদের মনোবলে। তাই দলকে আরও শক্তিশালী করতে চেয়ারপারসনের সক্রিয় নেতৃত্ব এবং তার সুচিন্তিত দিকনির্দেশনা প্রয়োজন। সেই নির্দেশনায় সামনের পথ পাড়ি দিতে চান নীতিনির্ধারক থেকে শুরু করে দলের সিনিয়র ও তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।

তবে সাধারণ মানুষের মতে, বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার রোমান্টিক স্বপ্নে বিভোর। নির্বাচন হলেই ক্ষমতায় যাবে, স্বপ্নের এ আবেশ থেকে বেরিয়ে পরিস্থিতি বিবেচনা করে বিএনপিকে ভবিষ্যতের কথা ভাবতে হবে। বিএনপি যদি পুরোদমে রাজনীতিতে ফিরতে চায়, তবে দলের যথাযথ সংস্কার করে, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে, তাদের ওপর ভর করেই ফিরতে হবে। শুধু নীরব সমর্থনে কাজ হবে না। আর যদি জনগণ সাড়া না দেয়, তবে কোনো কিছুই বিএনপিকে রাজনীতির কক্ষপথে ফিরিয়ে আনতে পারবে না। এখন বিএনপিকেই ঠিক করতে হবে তারা কী চায়।

লেখক-
মোঃ মনির হোসেন
সাংবাদিক ও কলামিস্ট
সিনিয়র সহ-সভাপতি, ফতুল্লা রিপোর্টার্স ক্লাব।

নিউজটি শেয়ার করুন :

আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..