রাজস্ব আয় বাড়াতে নানা পদক্ষেপে বাড়বে সংসার খরচ!
  1. rakibchowdhury877@gmail.com : Narayanganjer Kagoj : Narayanganjer Kagoj
  2. admin@narayanganjerkagoj.com : Narayanganjer Kagoj : Narayanganjer Kagoj
রাজস্ব আয় বাড়াতে নানা পদক্ষেপে বাড়বে সংসার খরচ!
বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৯:২৬ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
জেলা বিএনপির আহবায়ক মামুন মাহমুদকে কুতুবপুর শ্রমিক দলের ফুলেল শুভেচ্ছা ইজিবাইকের চালকদের অবরোধে ভোগান্তিতে নগরবাসী মানুষের ভোটাধিকার এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি : মামুন মাহমুদ রূপগঞ্জে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে দুই কিশোর নিহত সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের ওপর হামলা হাসিনা ও ছাত্রলীগ এখন ডেথ চ্যাপ্টার : হাসনাত আবদুল্লাহ নিজেকে ‘লক্ষ্মীপেঁচা’ বলে উপস্থাপন করলেন পরীমনি জাম্পিং করতে গিয়ে খাদে পড়লেন নোরা ফাতেহি নারায়ণগঞ্জে স্বামীর গোপনাঙ্গ কর্তন করল স্ত্রী ডাক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ভিক্টোরিয়ায় দুদকের অভিযান সরকারি জমি দখল করে বিএনপির কার্যালয় : দুই গ্রুপের উত্তেজনা! বক্তাবলীতে দুটি অবৈধ ইটভাটা বন্ধ, ২ লক্ষ টাকা জরিমানা সোনারগাঁয়ে পুলিশের অভিযানে ডাকাত সাদ্দাম গ্রেপ্তার কাভার্ডভ্যানের চাপায় বাবা নিহত, ছেলে আহত সিদ্ধিরগঞ্জে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় শিক্ষার্থীর মৃত্যু

রাজস্ব আয় বাড়াতে নানা পদক্ষেপে বাড়বে সংসার খরচ!

নারায়ণগঞ্জের কাগজ ডেস্ক
  • প্রকাশিত সময় : সোমবার, ২৭ মে, ২০২৪
রাজস্ব আয় বাড়াতে নানা পদক্ষেপে বাড়বে সংসার খরচ!

মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতিতে দিশেহারা নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্ত মানুষ। এমন প্রেক্ষাপটে আসন্ন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ থাকছে না। উলটো আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত পূরণে রাজস্ব আয় বাড়াতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, তাতে সংসার খরচ আরও বাড়বে। প্রায় অর্ধশত পণ্যের উৎপাদন, সরবরাহ পর্যায়ে ভ্যাট হার এবং সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হচ্ছে। পথের ভিখারি থেকে ধনিকশ্রেণির মানুষকেও ভ্যাটের ভার বইতে হবে।

এ তালিকায় আছে মোবাইল ফোন, সিগারেট, আমসত্ত্ব, ফলের জুস, কোমল পানীয়, কার্বোনেটেড বেভারেজ, এনার্জি ড্রিংকস, বিদ্যুৎসাশ্রয়ী বাল্ব প্রভৃতি। এছাড়া শূন্য শুল্কের শতাধিক পণ্যের ওপর এক শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হতে পারে। এতে ভোক্তা পর্যায়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় ও নিত্যব্যবহার্য পণ্যের দাম বাড়তে পারে।

বর্তমানে ৩৭ লাখ ব্যক্তিশ্রেণির করদাতা আয়কর রিটার্ন জমা দিয়ে থাকেন। এর মধ্যে বড় অংশ মধ্যবিত্ত শ্রেণির করদাতা। এ শ্রেণির করদাতাদের জন্য বাজেটে আয়কর খাতে ছাড় থাকছে না। মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি সত্ত্বেও আয়কর আদায়ের কথা চিন্তা করে বাজেটে করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানো হচ্ছে না। তবে করদাতা হয়রানি কমাতে আয়কর রিটার্ন অ্যাসেসমেন্টের বিধান বাতিল করা হচ্ছে। এজন্য বাজেটে আয়কর আইনে বড় পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এ সিদ্ধান্তের ফলে ব্যক্তি ও কোম্পানি-দুই শ্রেণির করদাতাই কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবেন।

এনবিআর মনে করে, করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়লে বিপুলসংখ্যক জনগোষ্ঠী আয়করের আওতার বাইরে চলে যাবে। মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, সেই সঙ্গে আনুপাতিক হারে মানুষের আয়ও বেড়েছে। তাই সীমা বাড়ানোকে যৌক্তিক মনে করে না সংস্থাটি। অতীত ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এনবিআর কখনোই টানা করমুক্ত আয়ের সীমা কমায়নি। সাধারণত ২-৩ বছর বিরতিতে আয়ের সীমা বাড়ানো হয়েছে। সর্বশেষ চলতি অর্থবছরের বাজেটে করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৩ লাখ টাকা করা হয়েছে। ২০২০-২১ সালে করমুক্ত আয়ের সীমা আড়াই লাখ থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ এবং ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ২ লাখ ২০ হাজার থেকে বাড়িয়ে আড়াই লাখ টাকা করা হয়।

অবশ্য বিত্তশালীদের কাছ থেকে বাড়তি কর আদায়ের পদক্ষেপ থাকছে বাজেটে। বর্তমানে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের সর্বোচ্চ করহার ২৫ শতাংশ রয়েছে। বছরে সাড়ে ১৬ লাখ টাকার বেশি আয় থাকলে ২৫ শতাংশ হারে আয়কর দিতে হয়। এটিকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করা হচ্ছে। বছরে সাড়ে ৪৬ লাখ টাকার বেশি থাকলে ৩০ শতাংশ আয়কর দিতে হবে।

অন্যদিকে রাজস্ব আয় বাড়াতে পরোক্ষ কর (আমদানি শুল্ক, সম্পূরক শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট) খাতে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হচ্ছে। পরোক্ষ করের হ্রাস-বৃদ্ধির প্রভাব সমাজের প্রতিটি শ্রেণির মানুষের ওপর পড়ে। পথের ভিখারি থেকে ধনিকশ্রেণি-সব মানুষকে পরোক্ষ কর দিতে হয়। আসন্ন বাজেটে স্থানীয় শিল্পের কর অবকাশ ও ভ্যাট অব্যাহতির সুবিধা সংকুচিত করে আনা; সিগারেট এবং মোবাইল ফোনে কথা বলা ও ইন্টারনেটের ওপর সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণা আসতে পারে। বর্তমানে মোবাইল ফোনে কথা বলায় ১৫ শতাংশ ভ্যাটের পাশাপাশি ১৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপিত আছে। অন্যদিকে ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাটের পাশাপাশি ১৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আছে। এর সঙ্গে ভোক্তাদের এক শতাংশ সারচার্জ দিতে হয়। আসন্ন বাজেটে আরও ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হতে পারে। ফলে ভোক্তা পর্যায়ে মোবাইল সেবার দাম বাড়তে পারে।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, একজন ভোক্তা বর্তমানে মোবাইল ফোনে ১০০ টাকা রিচার্জ করলে ৮৩ টাকার কথা বলতে পারেন। বাকি ২৭ টাকা ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক হিসাবে কেটে নেয় মোবাইল অপারেটরগুলো। পরে তা সরকারি কোষাগারে জমা দেয়। মোবাইল সেবার ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হলে ভোক্তারা ৭৮ টাকার কথা বলতে পারবেন। একইভাবে ইন্টারনেট খরচ বাড়বে।

অবসরে পরিবার নিয়ে সময় কাটানোর জন্য অনেকে অ্যামিউজমেন্ট পার্ক ও থিম পার্কে ঘুরতে যান। রাজস্ব আয় বাড়াতে সেখানেও হাত দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে অ্যামিউজমেন্ট পার্ক ও থিম পার্কে প্রবেশে এবং রাইডে চড়তে সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট আরোপিত আছে। এটি বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হচ্ছে। এতে পার্কে ঘোরার খরচ বাড়বে। এছাড়া প্রতিবছরের মতো এবারও সিগারেটের সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হচ্ছে। এতে ধূমপায়ীদের পকেট খরচ বাড়বে। স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কোমল পানীয়, কার্বোনেটেড বেভারেজ, এনার্জি ড্রিংকস, ফলের জুস, আমসত্ত্বের দাম বাড়তে পারে। কারণ, সরবরাহ পর্যায়ে এসব পণ্যের ওপর ভ্যাট বাড়ানো হচ্ছে। বর্তমানে ৫ শতাংশ ভ্যাট আছে। এটি বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হতে পারে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনবিআর-এর একজন কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, নতুন ভ্যাট আইনে একটি স্ট্যান্ডার্ড ভ্যাট হার (১৫ শতাংশ) ছিল। নানা কারণে সেটি রাখা সম্ভব হয়নি বিধায় বর্তমানে একাধিক হারে ভ্যাট আদায় করা হচ্ছে। আগামী বাজেটে এ হার যৌক্তিক করা হবে। এক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে অপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের ভ্যাট হার বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে এনবিআর-এর। ২০২৬ সাল নাগাদ পর্যায়ক্রমে সব পণ্য ও সেবার ওপর স্ট্যান্ডার্ড ভ্যাট হার আরোপ করা হবে।

অন্যদিকে আইএমএফ-এর পরামর্শে কর ব্যয় কমিয়ে আনতে আমদানি শুল্ক খাতেও পরিবর্তন আনা হচ্ছে। শূন্য শুল্কহারবিশিষ্ট শতাধিক পণ্যের ওপর এক শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হতে পারে। এ তালিকায় আছে চাল, গম, ভুট্টা, সরিষা বীজ, পরিশোধিত সয়াবিন ও পাম অয়েল, সানফ্লাওয়ার বীজ, তুলা বীজ, বিভিন্ন শাকসবজির বীজ, ক্রুড অয়েল, সার, প্রাকৃতিক গ্যাস, বিটুমিন, কয়লা, জিপসাম, ভিটামিন, ইনসুলিন, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন অত্যাবশ্যক ওষুধ এবং ভ্যাকসিন ও ওষুধের কাঁচামাল, বিভিন্ন ধরনের দরকারি রাসায়নিক ইত্যাদি। বর্তমানে ৩৩৫টি আইটেমের পণ্য আমদানিতে শুল্ক দিতে হয় না।

এক শতাংশ শুল্ক আরোপের ফলে বাজারে সেসব পণ্যের দাম বাড়বে না বলে মনে করছে এনবিআর। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনবিআর-এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিত্যপণ্য রাখতে শুল্কছাড় বা শূন্য শুল্ক রয়েছে। এছাড়া বাজারে পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা, শিল্পের প্রসার, রপ্তানি পণ্যের বাজার টেকসই করা এবং জনগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় অনেক পণ্যে শুল্কহার শূন্য রাখা হয়। রাজস্ব আয় বাড়াতে এবং আইএমএফ-এর ঋণের শর্ত পূরণে শূন্য শুল্কের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের বিকল্প নেই।

নিউজটি শেয়ার করুন :

আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..