ভালো মানুষের ছদ্ধ বেশে সিদ্ধিরগঞ্জ সুমিলপাড়া এলাকার হাজেরা হান্নান এক ভয়ংকর মাদক ব্যবসায়ী হয়ে উঠেছে। এই সংক্রান্ত সংবাদ পত্রিকা এবং অনলাইনে প্রকাশ হবার পর সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকা জুড়ে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। যার কোন শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই, সে যখন টাকা দিয়ে সাংবাদিক সেজে মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে এ নিয়ে সাংবাদিক সমাজেও ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সাংবাদিক সংস্থা থেকে সুক্ষè তদন্তের দাবী জানিয়েছেন সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন পত্রিকার সাংবাদিকরা। সে কিভাবে সাংবাদিকের কার্ড পেলো, তার শিক্ষাগত যোগ্যতা কি? কোন স্কুল, কলেক থেকে পাশ করেছে ইত্যাদি সুক্ষè তদন্তের মাধ্যমে সাংবাদিক সমাজকে সাংবাদিক নামধারী মাদক কারবারীদের কলঙ্ক থেকে মুক্ত করার দাবী উঠেছে। এদিকে সংবাদ প্রকাশের পর মাদক কারবারী ডজনখানী মামলার আসামী হাজেরা হান্নান বিভিন্ন নামে বেনামে অনলাইনে নিজের সাফাই গেয়ে নিজেকে দুধের ধোয়া তুলসী পাতা জাহির করতে চাইছে। তার মামলাগুলো থেকে সে নাকি খালাস পেয়েছে বলে প্রচার করছে। কিন্তু কোন কোন মামলা থেকে খালাস পেয়েছে তা উল্লেখ করে নাই। বিস্ফোরক মামলা থেকেও সে নাকি খালাস পেয়েছে বলে এ ধরনের মন্তব্য করছে এলাকায়। তার বিরুদ্ধে র্যাবের একটি গোপনীয় টিম তদন্তের মাধ্যমে জেনেছে এখনো তার বিরুদ্ধে ১০টি মামলা রয়েছে। এদিকে একটি নিরপেক্ষ সাংবাদক টিম গতকাল মাদক কারবারী হাজেরা হান্নানের বিষয়ে তদন্তে জানতে পারে বিস্ফোরক মামলার চার্জশীটে তার নাম রয়েছে। তার বিরুদ্ধে আরো অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। সাংবাদিক টিমটি নারায়ণগঞ্জ জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপারের নিকট মাদক কারবারী হাজেরা হান্নানের বিরুদ্ধে সুক্ষè তদন্তের দাবী জানান। এলাকার জনে জনে মানুষকে জিজ্ঞাসা করলে হাজেরা হান্নানের সত্যিকারের চেহারা উম্মেচিত হবে বলে সাংবাদিকদের নিকট এলাকাবাসী তাদের মতামত ব্যক্ত করেন। নিজের মাদক কারবারি প্রতিষ্ঠিত রাখতে এই হাজেরা হান্নান বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের শেল্টারে নিজের অবস্থান পাকা-পোক্ত রেখেছেন বলে সুষ্ঠু তদন্তে এলাকাবাসীর মাধ্যম থেকে বেরিয়ে আসবে। এদিকে বিভিন্ন নামে বেনামে অনলাইনে হাজেরা হান্নান নিজের পক্ষে যে সাফাই গেয়ে বিবৃতি দিয়েছেন তা সম্পূর্ন মিথ্যে। সেখানে তার একটি কথাও সত্য নয় বলে সচেতন মহল জানান। তার পক্ষে সাফাইকৃত সংবাদ প্রকাশ করে একজন মাদক কারবারীকে সমর্থন করা বলেও তাদের অভিমত। এরফলে প্রকৃত সাংবাদিকরা মার খেয়ে যাচ্ছে, আর মাদক কারবারীরা প্রশ্রয় পেয়ে যাচ্ছে বলে তারা জানান। তাই হাজেরা হান্নানের মতো ভয়ংকর মাদক কারবারীর পক্ষে সাফাই গেয়ে বিবৃতি ছাপানো থেকেও বিরত থাকতে সুযোগ্য সম্পাদকের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন এলাকার বিজ্ঞ ও সচেতন মহল।
এদিকে হাজেরা হান্নান প্রধানের বক্তব্য নিতে তার ০১৮…….৩৪ নাম্বারে দুপুর সাড়ে ১২টায় ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে এলাকাবাসী জানায়, তিনি ফোন খুব কম রিসিভ করেন। তিনি অনেক বড় মাফের নেতা হয়ে গেছেন তো। তিনি অনেক বড় বড় নেতারই ফোন ধরেননা, সম্পাদকের ফোন ধরেননা। আর আপনাদের তো কথাই নাই। এরপর এলাকাবাসী হান্নান প্রধানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পত্রিকা ও অনলাইনে বিভিন্ন কুকৃত্বী সংক্রান্ত সংবাদ, মারামারির ছবি সাংবাদিক টিমের হাতে তুলে দেন যেখানে দেখা যায়, সচেতন, স্বাধীন বাংলাদেশ নামে পত্রিকায় হান্নান প্রধানের বিরুদ্ধে অসংখ্য নিউজ। তার পুলিশের হাতে গ্রেফতারের ছবি।তার বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় খোঁজ খবর নিয়ে ১১ মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে মাদক ও বিস্ফোরক দ্রব্যসহ বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলাও রয়েছে। স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, আঃ হান্নান ওরফে হান্নান প্রধান ছিলেন বিএনপি থেকে আওয়ামীলীগে যোগদান করা নাসিক ৬ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর একাধিক মামলার আসামী সিরাজুল ইসলাম ওরফে সিরাজ মন্ডলের সহযোগী। রাজনৈতিকসহ বিভিন্ন কারণে এরই মধ্যে তার নামে হয়েছে হত্যাসহ ১১ মামলা। অধিকাংশ মামলায়ই আঃ হান্নান ওরফে হান্নান প্রধান এজহারভুক্ত আসামী। মামলার কারণে বিভিন্ন সময়ে একাধিক বার কারাবাসও করেছেন। একাধিক মামলার কারণে প্রায় তাকে পুলিশ প্রশাসনের ঝামেলায় পোহাতে হয়। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতে সে নিজে একটি পত্রিকার কার্ড সংগ্রহ করে সিদ্ধিরগঞ্জসহ নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার গাড়ী চালক, মাদক ব্যবসায়ীসহ কয়েক জন টাউট শ্রেনীর লোক গঠন করেছে জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কমিটি। ঐ কমিটির সভাপতি পরিচয় দিয়ে আঃ হান্নান ওরফে হান্নান প্রধান দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকা। সে আসলে ভালো মানুষের আড়ালে ভয়ংকার মাদক ব্যবসায়ী বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। তার বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জেলা পুলিশ সুপার ও র্যাবের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকার সাধারন মানুষ।
উল্লেখ্য, ভয়ংকার মাদক কারবারী হান্নান প্রধানের পিতার নাম ইউসুফ আলী প্রধান। যে “ক” লিখতে কলম ভাঙ্গে তিনটা সে সেজেছে সাংবাদিক। টাকা দিয়ে নিয়েছে জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সভাপতি পদ। এই পদ ব্যবহার করে সাংবাদিকের কার্ড নিয়ে তার আড়ালে হান্নান প্রধান হয়ে উঠেছে ভয়ংকর মাদক ব্যবসায়ী। মাদকের ব্যবসা চালাতে গিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মানুষের সেল্টার নিয়েছে এই হাজেরা হান্নান। কখনো সাবেক কাউন্সিলর সিরাজ মন্ডলের সেল্টার নিয়ে চালায় মাদক ব্যবসা। সেখান থেকে পুলিশের তাড়া খেয়ে সেল্টার নেয় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের সভাপতি আলহাজ¦ মতির সেল্টার। এভাবে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নেতার সাথে পল্টি মেরে মাদকের সা¤্রাজ্য এখনো টিকিয়ে রেখেছে। মাদক ব্যবসা করতে গিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের খাতায় কিশোরগ্যাং, মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে রয়েছে হান্নান প্রধানের নাম। রয়েছে হত্যা, মারামারি, মাদকসহ ডজনখানী মামলা। বিভিন্ন সময় হয়েছে বিভিন্ন পত্রিকার সংবাদ শিরোনাম। নিজেকে দুধের তুলসী পাতা বানাতে গিয়ে হান্নান তার মাদক ব্যবসা তারই আপন ভাই মান্নান ওরফে মান্নাকে দিয়ে পরিচালনা করছে। ভাই হান্নান প্রধানের মাদক ব্যবসা পরিচালনা করতে গিয়ে গত সোমবার মান্নার বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হয়েছে মাদকের মামলা। এই মামলায় মান্নানকে ৪নং আসামী করা হয়েছে। অথচ মাদক ছিলো হান্নান প্রধানের। মাদকের আসামী প্রথমে হান্নান পরে মান্নানের হবার কথা ছিলো বলে এলাকাবাসী জানায়। এলাকাবাসী ধারনা করেছিলো, মামলায় হান্নান ও মান্নানের নাম সবার আগে থাকবে। অথচ মামলায় পুলিশের সাথে সুসম্পর্ক থাকায় মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে হান্নান নিজের নাম বাদ দিয়েছে। আপন ভাই মান্নানকে করেছে ৪নং আসামী। আর প্রধান আসামী করেছে অসহায় ছেচরাদের।
গত রবিবার (১৫ মে) রাতে সিদ্ধিরগঞ্জের ৬ নং ওয়ার্ডের সুমিলপাড়া বিহারী কলোনি এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে পানির ট্যাংক সংলগ্ন ছাপড়া টিনের ঘরের ভিতর থেকে মৃতঃ আবুল কাশেমের ছেলে নাজিম উদ্দিন (২৪)কে পুলিশ গ্রেফতার করে। প্রত্যক্ষদশীরা জানায়, অভিযানটি হান্নানের অফিসের সামনে করা হলেও দেখানো হয়েছে বিহারী কলোনী। উদ্ধারকৃত মাদক সবগুলো হান্নান প্রধানের। এস, আই সৈয়দ আজিজুল হকের নেতৃত্বে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার একটি চৌকস টিম এই মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় । এবিষয়ে মাদক দ্রব্য আইনে থানায় একটি মামলা হয়েছে । মামলায় হান্নানের ভাই মান্নাকে ৪নং আসামী করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামীর মুখের বক্তব্যের ভিত্তিতে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে যে, মাদকগুলো মান্নান প্রধানের । পুলিশের অভিযান টের পেয়ে মান্নান তার দলবল নিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। এর আগে গত ১৮ এপ্রিল সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী ইপিজেডে চাঁদা দাবি ও সুপারভাইজারকে মারধরের করনেহান্নান প্রধানসহ তিনজনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন আদমজীনগর টপিক ৭ এর এনএস কনস্ট্রাকশন এর গোল্ডেন কনস্ট্রাকশন এর সুপারভাইজার শাহপরান (৩২)। অভিযোগে অন্যরা হলেন ফিরোজ (৩৮), মিজান (৩০) সহ অজ্ঞাত আরো ১০/১২ জন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ এপ্রিল সোমবার আদমজী ইপিজেডের ইপিক গার্মেন্টস এর গেটের সামনে বালুর সাপ্লাইয়ের মেমো করিতে গেলে উপরে উল্লেখিত অভিযুক্ত সহ তাদের সহযোগীরা সুপারভাইজার শাহপরান কে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে এবং ব্যবসা করতে হলে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এ সময় সুপারভাইজার চাঁদা প্রদান করিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে নগদ ৬০ হাজার টাকা ও দুটি অ্যান্ড্রয়েড ফোন উল্লেখিত অভিযুক্তরা নিয়ে যায় এবং খুন করার হুমকি প্রদান করা হয়। এ ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় সুপারভাইজার শাহপরান একটি অভিযোগ দায়ের করেন। থানার এসআই হানিফ অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করছেন।
গত বছর ১০ জানুয়ারী হান্নান প্রধানের চোরাই তেলের আস্তানায় অভিযান চালিয়ে ১০ হাজার লিটার চোরাই ফার্নিশ তেল উদ্ধার করেছে র্যাব-১১। এসময় হান্নানের সহযোগী চোরাই তেল চোর চক্রের সদস্য মোঃ জাহাঙ্গীর আলম (২৮) নামে একজনকে আটক ও একটি তেলের ট্যাংকলরী জব্দ করেছে। অভিযান টেন পেয়ে হান্নান সুকৌশলে পালিয়ে যায়। (১১ জানুয়ারী) দুপুরে র্যাব-১১’র সদর দপ্তর থেকে সিপিএসসি’র কোম্পানী কমান্ডার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: জসিম উদ্দিন চৌধুরী, পিপিএম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব জানায়, গত রবিবার (১০ জানুয়ারী) রাত সাড়ে ৭ টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের আটি গ্রামের ছাপাখানার দক্ষিণ পাশে মোঃ হান্নান প্রধানের ফার্নিশ তেলের হাউজে অভিযান চালিয়ে এ চোরাই তেল ও চোর চক্রের সদস্যকে আটক করা হয়।
র্যাব জানায়, সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল এলাকার পদ্মা ও মেঘনা ডিপো কেন্দ্রিক কয়েকটি চোরাই তেলের সিন্ডিকেট চোরাই তেলের আস্তানা গড়ে তুলেছে। হান্নান প্রধানের প্রত্যক্ষ মদদে ডিপো হতে অবৈধ উপায়ে তেল সংগ্রহ করে আটি এলাকায় মাটির নিচে ৫০ থেকে ৬০ হাজার লিটার ধারণ ক্ষমতার তেলের হাউজ তৈরি করে। সেখানে চোরাই ফার্নিশ তেল মজুদ করে এবং রাতের অন্ধকারে তেলের ট্যাংকার ট্রাকে করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ ও বিক্রয় করে আসছে। এই চোরাই তেলের আস্তানার মালিক হান্নান প্রধানের বিরুদ্ধে ইতোঃপূর্বে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় বিভিন্ন অপরাধে ১০টি মামলা হয়। যা চলমান রয়েছে। পলাতক হান্নান প্রধান ও আটক জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। উল্লেখ্য, যেসব মামলায় আঃ হান্নান ওরফে হান্নান প্রধান আসামী সেগুলো হল- সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এফআইআর নং-৩৩ (২০/১০/২০১৪), এফআইআর নং-১২ (১২/৩/২০১৩), এফআইআর নং-২৯ (১৫/৯/২০০৬), এফআইআর নং-৩৫ (৩৩/৪/২০১৬), এফআইআর নং-১৪ (১১/৫/২০১৩), এফআইআর নং-১৫ (১১/৫/২০১৩), এফআইআর নং-৩২ (২৯/৫/২০০৯), এফআইআর নং-৯ (০৬/১/২০২০), এফআইআর নং-৭ (১৮/৫/২০২০), এফআইআর নং-৪২ (২০/৩/২০২০), এফআইআর নং-৩ (৩/৮/২০২০)।
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...