ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালাম বলেছেন- ‘স্বপ্ন সেটা নয় যেটা মানুষ, ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দেখে, স্বপ্ন সেটাই যেটা পূরনের প্রত্যাশা মানুষকে ঘুমাতে দেয়না’। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার আসনের সাবেক এমপি আঙ্গুর যেন এ প্রবাদ বাক্য মানতে নারাজ। আঙ্গুর এ প্রবাদ বাক্য মানতে নারাজ হলেও তৃণমূলের কাছে অবশ্য তা বাঞ্চনীয়। দীর্ঘদিন পর বিএনপির সুসময় দেখা দেওয়ায় ১৪ বছর ঘুমন্ত আঙ্গুর স্বপ্ন দেখছেন ফের এমপি হওয়ার। যার ফলে সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে হঠাৎ করে রাজপথে উকি মারতে। ১৪ বছর একটি মামলাও হয়নি তার নামে। তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতে নৌকার হাতেকড়ি, বিদেশী গোয়েন্দা সংস্থার জলিলের ট্রামকার্ডের অন্যতম সদস্য ও সংস্কারপন্থী তকমা লাগানো আর ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে সরাসরি আওয়ামী লীগ এর পক্ষে কাজ করেছেন তার বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে।
উল্লেখ্য যে, ২০০৮ এর নির্বাচনে তার বড় ভাই মরহুম বদরুজ্জামান খসরু বিএনপি’র নমিনেশন পেয়েছিলেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বিষাদগার করা আঙ্গুর ফের আড়াইহাজার বিএনপিকে ধ্বংসের নীলনকশার ছক আকছেন। তবে এমন সুযোগ আঙ্গুরকে দেয়া আর হবে না সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা। এবার শক্ত হাতে প্রতিহত করা হবে বলে হুশিয়ারি প্রদান করেছেন আড়াইহাজার বিএনপির আন্তঃপ্রাণ তৃণমূল নেতাকর্মীরা।
তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতে, আতাউর রহমান খান আঙ্গুর এর রাজনীতির শুরুটা হয় নৌকার বৈঠা ধরে। ছিলেন হাইজাদী ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন বাতেন চেয়ারম্যান এর কমিটির ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। পরবর্তীতে তৎকালীন আড়াইহাজার উপজেলা চেয়ারম্যান এএম বদরুজ্জামান খান খসরু বদৌলতে বিএনপির রাজনীতির ছত্রছায়ায় ঠাই নিলেও অন্তরে ছিল নৌকার ঢেউ। বিএনপির রাজনীতি না করেও এবং বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পর্ক না থাকার পরেও এএম বদরুজ্জামান খান খসরু’র দয়ায় এমপি হয়ে দুর্নীতি, চাকুরি বানিজ্য, অপরাজনীতি এবং নেতাকর্মীদের সাথে প্রতারণা করে রাতারাতি হয়ে যান আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ।
সূত্র বলছে, ওই সময় হঠাত করে শূন্য থেকে ধনকুবের হওয়ার খবর চারদিকে চাউর হয়ে যাওয়ায় ও বিএনপির দুঃসময় দেখে নিজেকে দুদকের জাল থেকে সেভ জোনে রাখতে আড়াইহাজার উপজেলায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষে ফের নৌকার পালের হাওয়া খেতে আড়াইহাজার বিএনপিকে লাথি মেরে যোগ দিতে চেয়েছিলেন আওয়ামী লীগে। আর এমন সময় ক্ষিপ্ত হয়ে ছুটে যান খসরু, বন্ধ করেন আঙ্গুরকে আওয়ামী লীগে যোগ দেয়া হতে। যার ফলে ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে মাশুলও দিতে হয়েছে খসরুকে। এমন সব কর্মকান্ডে ও দলের সাথে প্রতারণা করার কারনে আজ নেতাকর্মী থেকে বিচ্ছিন্ন আঙ্গুর। নেতাকর্মী এবং এলাকার সাধারণ মানুষ তাকে বিশ্বাস করে না, তাকে মিথ্যাবাদী বলে ডাকে। মানুষ বলে তার মুখে মধু, অন্তরে বিষ। সুবিধাবাদী এই লোক ২০০৮ এর নির্বাচনে আওয়ামীলীগকে সমর্থন করে দলের সাথে বেইমানি করে। তাই সংস্কারপন্থী এবং জলিলের ট্রাম্প কার্ড এর সদস্য আতাউর রহমান আঙ্গুর আড়াইহাজার বিএনপিতে এখন জনবিচ্ছিন্ন।
তৃণমূল নেতাকর্মীরা আরোও বলেন, আতাউর রহমান খান আঙ্গুর আড়াইহাজার বিএনপির একটি সমালোচিত চরিত্র। যাকে বিএনপির দু:সময়ে আড়াইহাজার থানার গন্ডি পেরিয়ে কখনো দেখা যায়নি জেলার কোন প্রোগ্রামে। তার রাজনীতি হাল হলো নদীর স্রোতের মত এই আছে তো, এই নেই। সম্প্রতি বিএনপি ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা দেখে সক্রিয় হয়ে উঠার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু খসরু ছায়া না থাকার কারণে যেখানেই যাচ্ছেন বিতাড়িত করছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা।
জানাগেছে, নেতাকর্মীদের মামলা হামলায় ফেলে নিরুদ্দেশ আঙ্গুর দীর্ঘদিন পর এলাকায় প্রবেশ করায় রীতিমতো বেশ কয়েক স্থানে অপমানিতও হয়েছেন। যার ফলে নির্বাচনমূখী এই নেতা আড়াইহাজার আওয়ামীলীগের বি টিম খ্যাত আঙ্গুরকে আর মানতে নারাজ তৃণমূল বিএনপি।
তারা আরোও বলেন- তার উদ্দেশ্য রাজনীতি নয়, এমপি হওয়াটাই তার মূল লক্ষ্য। কিন্তু বিএনপির রাজনীতির দায়টুকু তিনি বহন করতে নারাজ। যার ফলে আড়াইহাজার বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীরা প্রায়শ তাকে সম্বোধন করে থাকেন তিনি হলেন কাজীর গরু, যার কোন অস্তিত্ব নেই আড়াইহাজারে। ১/১১ সময়ে সংস্কারবাদী তকমা লাগানো আঙ্গুর বর্তমান আড়াইহাজার বিএনপিতে মীরজাফর নামে খ্যাত। পরে সংস্কারবাদী তকমা মুছে দলে ফিরলেও ক্ষমতার বাহিরে থাকা বিএনপির দলের জন্য নেই তার কোন অবদান। বরং ২০০৮ সালে বিএনপি দলের দেওয়া খসরু’র ধানের শীষ মার্কার বাহিরে গিয়ে রাজনীতি করে আড়াইহাজারবাসীর কাছে খেতাব পান মীর জাফর। নেতাকর্মীরা আরোও বলেন,আঙ্গুরের বড় ভাই প্রয়াত নেতা বদরুজ্জামান খসরু যে বিএনপিকে তিল তিল করে গড়ে তুলেছিলেন, নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থ রক্ষার জন্য আঙ্গুর সেই বিএনপিকে দূর্বল এবং ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছেন। আড়াইহাজারের রাজনীতিতে বিগত ১৪ বছর ধরে আঙ্গুর নজরুল ইসলাম বাবুর নাচের পুতুল হয়ে নাচছেন। ফলে বিগত ১৪ বছরে নেই হয়নি তার নামে কোন রাজনৈতিক মামলা। মামলা হামলা থেকে তিনি সব সময়ই থাকেন সেভ জোনে। বাবুর নির্দেশেই একদিকে দলীয় কর্মসূচিতে সম্পূর্ণ নিস্ক্রিয় রয়েছেন।
তবে আঙ্গুর বাবুকে একটি কথা প্রকাশ্যেই বলে থাকেন, আর তা হলো, ‘বাবুর মাথায় তিনিই প্রথম মুকুট পড়িয়েছেন’। মূলত এসব কারণেই আঙ্গুরের বিরুদ্ধে কোনো মামলা মোকদ্দমা হয় না। যার ফলে আড়াইহাজারের প্রত্যেকটি নেতাকর্মী তো বটেই বিএনপির সমর্থকরাও এখন এই আঙ্গুরকে দেখেন চরম ঘৃনার চোখে। এরই মাঝে রাজনৈতিকভাবে একেবারে জিরোতে পরিনত হয়েছেন আঙ্গুর। যার ফলে তৃণমূলের মতে আঙ্গুরকে ফের আড়াইহাজার বিএনপিতে প্রতিষ্ঠিত করা মানে, ‘নতুন বোতলে পুরানো মদ ঢালা’।
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...