আমাদের সাথে যোগাযোগ না করে কাজ করলে ফলাফল ভালো হবে না । নিজেরা নিজেরা সমিতি বানিয়েছেন, দয়া করে অরাজকতার সৃষ্টি করবেন না নারায়ণগঞ্জে। হাত জোড় করে বলছি, আন রেজিস্ট্রার কোন সংগঠন নিয়ে বিশৃঙ্খলা করবেন না। সবকিছুর একটাই জায়গা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি। যতক্ষণ পর্যন্ত চেম্বারের মেম্বার না হবে, ট্রেড লাইসেন্স দিবেন না, এনসিসি’র মেয়রের প্রতি বিনীত অনুরোধ।
রবিবার ১১ অক্টোবর সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স ভবনের ৮ম তলায় এক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন বিকেএমইএ’র সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান।
নিতাইগঞ্জের ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট কার্যক্রমের উদ্বোধনের অনুষ্ঠানের সমালোচনা করে সেলিম ওসমান বলেন, কয়েকদিন আগে দেখলাম নিতাইগঞ্জে অনেক বড় অনুষ্ঠান। প্রধান অতিথি ছিলেন এসপি সাহেব, অনেকগুলো সংগঠন আছে যারা অস্থায়ী। এক শহরে দুই বাঘ থাকতে পারে না, ছোট ছোট ব্যাঙ্গের ছাতা বানিয়ে এই-ওই সমিতি চলবে না। রেজিষ্ট্রেশন বিহীন সংগঠন করলে কঠোর সিদ্ধান্ত নিবো। আসেন, বসেন সেক্টর ওয়াইজ সমস্যার সমাধান করেন। অনুষ্ঠানের কয়েকদিন আগে এক ছাতার নিচে আমরা মিটিং করলাম। নিতাইগঞ্জের অনুষ্ঠানে যিনি সভাপতি হিসেবে ছিলেন তিনি বললেন আমাকে বানানো হয়েছে। আমি বলে দিচ্ছি এটাই ফাটলের প্রথম দিক।
রোববার যানজট সমস্যা এবং ব্যবসায়ীদের চলমান সংকট নিরসনে ব্যবসায়ীদের নিয়ে আয়োজিত উক্ত মতবিনিময় সভায় সেলিম ওসমান বলেন, বর্তমানে ১৫’শ মেম্বার রয়েছে চেম্বার অব কর্মাসে, এটা বৃদ্ধি ব্যাপার না, একসময় মাত্র ১৫ জন ছিল সেখান থেকে আজকে ১৫’শ। যে ইনকাম টেক্স দিতে পারবে সেই মেম্বার হতে পারবে। ফেরিওয়ালা এখানে মেম্বার হতে পারবেন না।
সাম্প্রতিক সময়ে মাইক্রোফাইবার গার্মেন্টসে শ্রমিক অসন্তোষ নিয়ে সেলিম ওসমান বলেন, নারায়ণগঞ্জে শ্রমিক আন্দোলন বন্ধ ছিল। একজন সরকারি লোক খুঁজে বেরায় কোথায় গন্ডগোল। কয়েকদিন আগে খবর পেলাম একটি গার্মেন্টস এ গন্ডগোল হলো, খবর পেলাম আমি ঢাকায় ছিলাম এবং হাতেম সাহেব নারায়ণগঞ্জ ছিল, তাকে সহ কয়েকজন পাঠালাম। ১৩/১ এ বন্ধ করা হয়েছে গার্মেন্টসটি। অথচ আজকে এক নেতা রাস্তায় আন্দোলন করছেন।
চাষাড়াসহ আশ-পাশের এলাকায় হকারদের উচ্ছেদ প্রসঙ্গে সেলিম ওসমান বলেন, করোনাকালে আমিই বলেছিলাম ইদ পর্যন্ত যাতে হকাররা থাকতে পারে। কেউ না কেউ তো ফুটপাতের সুযোগ নিচ্ছে। শহরের মাঝখানে মদের দোকান, আমরা দেখেও দেখি না। চেঞ্জ ওর ডাই, পরিবর্তন করতে হবে নয়তো মরতে হবে।
খানপুর হাসপাতালের সভাপতি পদ ছাড়ার প্রসঙ্গে সেলিম ওসমান বলেন, নারায়ণগঞ্জ ৩শ শয্যা থেকে রিজাইন দিছি, শারীরিক কারণ এবং দুর্নীতির কারণ দেখিয়েছি মন্ত্রণালয়ে। কারণ, সেখানের দুর্নীতি দমন সম্ভব নয়।
নারায়ণগঞ্জের পরিবহন প্রসঙ্গে সেলিম ওসমান বলেন, ৭০ পার্সেন্ট বাসেরই কাগজপত্র নাই। সিএনজি-অটোরিক্সা-বাস এতগুলোর দরকার নাই। অটোসহ অনেক কিছুর স্ট্যান্ড আছে অবৈধ। মেয়রকে বলতে চাই, সেগুলো বন্ধের সময় এখনই। মেয়রেকে বলতে চাই একসাথে বসে সমস্যার সমাধান করি আসেন। মেয়র যদি চায়, গুলশান-বনানী থেকে কম হবে না। কারণ, বৈদেশিক মুদ্রা নারায়ণগঞ্জ সবচেয়ে বেশি উপার্জন করে।
ব্যবসা সবসময় একরকম থাকে না মন্তব্য করে সেলিম ওসমান বলেন, টানা মাল টানবাজারে ঢুকাই সঠিক কাগজপত্র থাকে না। ব্যবসায়ীদের মধ্যে খারাপ-ভালো আছে। একজনের জন্য সবার দুর্নাম হয়। মদনগঞ্জের চালের আড়ত কোথায়? কাপড় মানেই কালির বাজার ছিল, এখন কোথায় গেল? ব্যবসা মুভ করে।
ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর উদ্দেশ্যে বিকেএমইএ’র সভাপতি বলেন, স্বস্তিতে নারায়ণগঞ্জে বসবাস করতে পারছি না। সব ব্যবসায়ী সংগঠনরা মেয়রকে চিঠি দেন, আমরা আপনার সাথে বসতে চাই, আপনার থেকেও দিক নির্দেশনা দেন।
সমাপনী বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কর্মাসের সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল সরকারের প্রতি দাবি রেখে বলেন, সবচেয়ে বেশি টেক্স নারায়ণগঞ্জ দেয়, এই শহরে ট্রাফিক সিগন্যালের ব্যবস্থা করার দাবি জানাচ্ছি। একইসাথে ধর্ষকের শাস্তি ফাঁসি প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি দেখতে বলার জন্য বলেছেন তাই তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন – বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল, সাবেক সংসদ সদস্য হোসনে আরা বাবলী, বিকেওএ’র সভাপতি সেলিম সরোয়ার, চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র পরিচালক শাহাদাত হোসেন ভুইয়া সাজনুসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ীক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...