সোনারগাঁও পৌরসভার জয়রামপুর গ্রামে আগুন লেগে দগ্ধ কলেজ ছাত্র অপূর্ব দাস ও তার মা বানু রানী দাসের মৃত্যুর জন্য বাড়ির মালিক সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কর্মচারী মোঃ মিজানুর রহমানকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। ঘটনাটি হত্যা নাকি দূর্ঘটনা তার নিরপেক্ষ তদন্ত করা দরকার। মা ও ছেলের দগ্ধ হয়ে মৃত্যুর ঘটনাটি পুরো রহস্যে ঘেরা।
তবে স্থানীয় এলাকাবাসীর দাবি, জয়রামপুরের বাসিন্দা এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস সহকারী মিজানুর রহমানকে গ্রেফতার করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস সহকারি পদের প্রভাবে তদন্ত সঠিক হচ্ছে না বলে জানায় এলাকাবাসী।
জানা গেছে, গত মঙ্গলবার সকালে কলেজ ছাত্র অপূর্ব দাস ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। পরদিন বুধবার সকালে মা বানু রানী দাসের মৃত্যু হয়। মা ও ছেলের মৃত্যুর পরই একটি পক্ষ থেকে বিভিন্ন ভাবে ঘটনাটি বিতর্কিত করার অপচেষ্টা করা হয়। ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য মোবাইল বিস্ফোরণ ও বিদ্যুৎ স্পর্শের কথা এলাকায় ছড়িয়ে দেয়া হয়।
তবে স্থানীয়রা জানায়, মোবাইল বিস্ফোরণের কথা বললেও মোবাইল ও ল্যাপটপ অক্ষত ছিলো। মা ও ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য মোবাইল বিস্ফোরণ, গ্যাস বিস্ফোরণ বা বিদ্যুতের শর্ট সার্কিটের তথ্য ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে কিনা তা সুষ্ঠ তদন্ত করা প্রয়োজন।
এদিকে, চিকিৎসকরা জানিয়েছেন অপূর্ব দাসের শরীরের ৭০ ভাগ দগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তার মায়ের মাথায় অংশে দগ্ধ হওয়ার শ্বাসনালী ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে মা বানু রানী দাসের মৃত্যু হয়েছে।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জজ কোর্টের অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, ঘটনাটি পরিকল্পিত হত্যা হতে পারে। কারণ মোবাইল বিস্ফোরণে ৭০ ভাগ দগ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এমনকি মোবাইল বিস্ফোরণে দু’জনের মৃত্যু হওয়াটা অস্বাভাবিক। পুলিশের উচিত এই মামলাটি সর্বোচ্চ গুরুত্বসহকারে তদন্ত করা এবং বাড়ির মালিককে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা। তাহলে প্রকৃত রহস্য উদঘাটন সম্ভব হবে।
অপূর্ব দাসের আত্মীয় সাংবাদিক দীপন সরকার গণমাধ্যমকে বলেন, মোবাইল বিস্ফোরণের খবরটি একেবারেই মিথ্যা। অপূর্বের ব্যবহৃত মোবাইল ও ল্যাপটপ এখনো ভালো রয়েছে। যেহেতে এগুলো ভালো, সেহেতু মোবাইল বিস্ফোরণে তাদের মৃত্যু হয়নি।
বাড়ির মালিক মিজানুর রহমান গনমাধ্যমকে জানান, তাদের শরীরে কিভাবে আগুন লেগেছে তা বলতে পারছি না। তবে সে যখন ঘর থেকে বেরিয়ে আসে তখন তার কানে হেডফোন ও চার্জারের তার জড়ানো ছিল। এ সময় তার মুখ ও বুক ঝলসানো ছিল। ঘরে তার মায়ের মাথার চুল আগুনে পোড়া ছিল। আগুনে খাট, তোশক ও আসবাবপত্র পুড়ে গেছে।
উল্লেখ্য যে, গত রোববার সকালে মারাত্মকভাবে আগুনে দগ্ধ হয় কলেজ ছাত্র অপূর্ব দাস ও তার মা বানু রানী দাস।
পরে মা ও ছেলেকে মূমূর্ষ অবস্হায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। দুদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মঙ্গলবার সকালে ছেলে অপূর্ব দাসের মৃত্যু হয়। ছেলের মৃত্যুর একদিন পর বুধবার সকালে মা বানু রানী দাসের মৃত্যু হয়।
জানা যায়, সোনারগাঁও পৌরসভার জয়রামপুর গ্রামের বাসিন্দা ও সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসের কর্মচারী মোঃ মিজানুর রহমানের ভাড়াটিয়া বানু রানী দাস ও তার ছেলে অপূর্ব দাস রোববার সকালে শরীরে আগুন লেগে মারাত্মকভাবে দগ্ধ হয়েছে।
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...