নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় বারো বছরের ছেলে শিশুকে বলাৎকারের অভিযোগ উঠেছে মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষকের নাম মোঃ আলিফ মাহমুদ (২১)। স্থানীয়রা আটক করে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। গত বুধবার (২২ জুলাই) রাত ১১টায় নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার আলীগঞ্জ এলাকার তালিমুল কোরআন ক্যাডেট মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে। বলাৎকারের শিকার ঐ শিশুটি মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র।
এ ঘটনায় গত সোমবার ২৭ জুলাই রাতে শিশুর বাবা বাদী হয়ে শিক্ষক আলিফ মাহমুদকে আসামি করে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত শিক্ষক আলিফ মাহমুদ নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার আলীগঞ্জ মধ্যপাড়া ‘স’ মিল এলাকার বাসিন্দা।
অভিযোগের বরাত দিয়ে আলমগীর হোসেন জানান, আমার ছেলে শোয়াইব ২ বছর হতে আলীগঞ্জের তালিমুল কোরআন ক্যাডেট মাদ্রাসার হেফজখানায় লেখাপড়া করে আসছে। আমার ছেলেসহ আবদুল মালেকের ছেলে ফজলুল করিম এবং সীমা আক্তারের ছেলে সাব্বির হোসেন সহ অন্যান্য ছেলেরা ওই মাদ্রাসার হেফজখানায় লেখাপড়া করার জন্য আবাসিক থেকে আসছে। গত ২৪ জুলাই সকাল ৯ টার সময় আমি আমার ছেলের নাস্তা নিয়ে মাদ্রাসায় গিয়ে আমার ছেলে শোয়াইবের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করি ও লেখাপড়ার খোঁজখবর নেই। তখন আমার ছেলেকে শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ দেখে জিজ্ঞাসা করলে সে কান্না করতে থাকে। তখন আমি মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল সাহেবকে অবগত করে আমার ছেলেকে বাসায় নিয়ে আসি। বাসায় যাওয়ার পর আমি সহ আমার স্ত্রী আমার ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে জানায় যে, ২২ জুলাই রাত সাড়ে এগারোটার সময় আমার ছেলে সহ তার সহপাঠীরা রাত্রে খাওয়া-দাওয়া করে ওই মাদ্রাসার দোতালায় তাদের থাকার রুমে ঘুমিয়ে পড়ে। রাত সাড়ে এগারোটার সময় সহকারী শিক্ষক আলিফ মাহমুদ আমার ছেলে শোয়াইবের পাশে গিয়ে আমার ছেলেকে ঘুমন্ত অবস্থায় তার পুরুষাঙ্গ ও শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। একপর্যায়ে আসামী আলিফ মাহমুদ আমার ছেলেকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে তার পরনের কাপড়-চোপড় খুলে পায়ু পথে বলাৎকার করে। ছেলে আলিফ মাহমুদের ভয়ে বিষয়টি করোর নিকট প্রকাশ করে নাই। আমার ছেলে এই ঘটনায় শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। আসামী আলিফ মাহমুদ ইতিপূর্বে আমার এক এলাকার আব্দুল মালেকের ছেলে একজন ছাত্র ফজলুল করিম এবং শিমু আক্তার এর ছেলে সাব্বির হোসেন ভাইকে সহ একাধিক ছাত্রকে বিভিন্ন সময় ভয়-ভীতি দেখায় উক্ত মাদ্রাসা একাধিকবার বলাৎকার করেছে। আমি সহ স্থানীয় লোকজন মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মালিককে জানাইয়া আসামী আলিফ মাহমুদকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে আমার ছেলেকে ২২ জুলাই রাত সাড়ে এগারোটার সময় এবং হেফজখানার ছাত্র ফজলুল করিম, সাব্বির হোসেন দ্বয়কে সহ অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীদের বলাৎকার করেছে বলে স্বীকার করে। ওই সময়ে স্থানীয় উত্তেজিত জনতা আসামী আলিফ মাহমুদকে মারপিট করে সামান্য জখম করে।
এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসলাম হোসেন বলেন, মামলা রুজু করে অভিযুক্ত আসামীকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...