সরকারি নির্মাণে পরিবেশ দূষণকারী মাটি পোড়া ইট নিষিদ্ধ করে শতভাগ পরিবেশবান্ধব কংক্রিট ব্লকের ব্যবহার নিশ্চিত করার দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ কংক্রিট ব্লক প্রস্তূতকারক মালিক সমিতি। বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনের আয়োজন করে সংগঠনটি। মানববন্ধন শেষে তারা পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করে।
স্মারকলিপিতে জানানো হয়, ২০১৯ সালের ২৪ নভেম্বর জারিকৃত একটি প্রজ্ঞাপনে বলা হয়- ২০২৫ সালের মধ্যে সরকারি সকল নির্মাণ, উন্নয়ন ও সংস্কার কাজে কেবল কংক্রিট ব্লক ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা থাকবে। এ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে গত কয়েক বছরে দেশব্যাপী প্রায় আট শতাধিক কংক্রিট ব্লক কারখানা গড়ে উঠেছে। উদ্যোক্তারা বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করেছেন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আজও অধিকাংশ সরকারি প্রকৌশল প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞাপন অনুসরণ করছে না। ফলে ব্লক শিল্প একটি সংকটময় অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, গণপূর্ত অধিদফতর ছাড়া অন্যান্য সরকারী প্রকৌশল বিভাগ, যেমন সড়ক ও জনপথ অধিদফতর, সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভাগুলো এখনো মাটি পোড়া ইট ব্যবহার করে চলেছে। এমনকি তারা তাদের প্রকল্পের শিডিউল অব রেট এ কংক্রিট ব্লকের অন্তর্ভুক্তিও করেনি। এতে একদিকে প্রজ্ঞাপন লঙ্ঘিত হচ্ছে, অন্যদিকে কংক্রিট ব্লক খাত পড়ছে ধ্বংসের মুখে।
বাংলাদেশ কংক্রিট ব্লক প্রস্তুতকারক মালিক সমিতির সভাপতি লে. কর্নেল মোঃ শাখাওয়াত হোসেন (অব.) এবং সাধারণ সম্পাদক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে চার দফা দাবি উত্থাপন করা হয়:
১. ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে সরকারি সকল প্রকল্পে মাটি পোড়া ইট নিষিদ্ধ ঘোষণা করে শতভাগ কংক্রিট ব্লকের ব্যবহার নিশ্চিত করা।
২. ২০৩০ সাল পর্যন্ত কংক্রিট পণ্যগুলোর উপর থেকে ভ্যাট সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা।
৩. কংক্রিট ব্লক কারখানার জন্য সহজ শর্তে ও স্বল্প সুদে ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করা।
৪. কংক্রিট ব্লক শিল্পকে ‘সবুজ শ্রেণীর শিল্প’ হিসেবে ঘোষণা করা।
উল্লেখ্য, পরিবেশ উপদেষ্টা সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “২০২৫ সালের মধ্যে সরকারি নির্মাণে মাটি পোড়া ইটের ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা হবে।” সমিতির পক্ষ থেকে এই ঘোষণার দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানানো হয় স্মারকলিপিতে।
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, সরকারি সহায়তা ছাড়া শুধু প্রজ্ঞাপনের আশায় যারা কারখানা স্থাপন করেছেন, তারা এখন বড় ধরণের আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি। অনেকেই লোকসানে পড়ে কারখানা বন্ধ করে দিচ্ছেন। এটি সরকারের পরিবেশবান্ধব উদ্যোগের ভবিষ্যৎ কার্যকারিতা ও বিশ্বাসযোগ্যতাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...