২০২৪ সনের ৫ আগষ্টের আগে নারায়ণগঞ্জে এককভাবে সন্ত্রাসী, ভুমিদস্যুতা, মাদককারবাড়ি সহ সকল ধরনের অপরাধ জগত চালিয়েছে ওসমানীয় সম্রাজ্য তথা ওসমান পরিবার। পুরো শহরে জুরে আজমেরী ওসমান ছিলেন সন্ত্রাসীদের গডফাদার। নারায়ণগঞ্জে আজমেরী ওসমান ছিলেন আতঙ্কের নাম। এমনকি তার আশে পাশে যারা ছিলেন তারাও নানা ভাবে অপকর্ম চালিয়ে বিত্তশালী বনে গেছেন। এছাড়া গত বছরের ৫ আগষ্টের আগে ছাত্র জনতার আন্দোলন কে দমাতে আজমেরী ওসমানের সন্ত্রাসী বাহিনী গুলি চালায়। তখন আজমেরী ওসমানের সন্ত্রাসী নাসির, কাজী আমির, পিজা শামীম, মুকিতের সাথে তার ক্যাশিয়ার রাজুও প্রকাশ্যে তাদের সাথে মাঠে নামেন। আর এজন্য আজমেরী ওসমানের ক্যাশিয়ার রাজু হত্যা মামলার আসামী হয়েছেন।

এদিকে বিগত সময়ে আজমেরী ওসমান পরিবারের অবৈধ টাকা পয়সা কাকে দিয়ে লেনদেন করতেন কিংবা তাদের ক্যাশিয়ার কে ছিলেন তাকে নিয়ে আলোচনা না থাকলেও সম্প্রতি এই রাজুকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। কেননা আজমেরী ওসমানের পরিবারের ক্যাশিয়ার ছিলেন পারভীন ওসমানের ঘনিষ্ঠ সহচর কাজের শিরিন বেগম। শিরিন বেগমের ছেলে হত্যা মামলার আসামী রাজু ছিলেন আজমেরী ওসমানের ক্যাশিয়ার।

গত বছরের ৫ আগষ্টে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের সদস্য সহ তাদের সম্রাজ্যের সদস্যরা পালিয়ে রয়েছে। তার মাঝে প্রয়াত নাসিম ওসমানের ছেলে আজমেরী ওসমান পালিয়ে ভারতের কলকাতায় রয়েছে। ইতোমধ্যে তার মদ খাওয়ার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। তবে তার সাথে পারভীন ওসমান নেই বলে জানান একাধিক সুত্র। তবে তিনি ঢাকাতে রয়েছেন বলে জানান বিশ্বস্ত সুত্র।

এদিকে অনুসন্ধানে আজমেরী ওসমানের ক্যাশিয়ার নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে। সন্ত্রাসী রাজর বিরুদ্ধেু ২০২৪ সনের ২৩ আগষ্ট ফতুল্লা মডেল থানায় কামাল হোসেন নামের এক ব্যক্তি হত্যা মামলা দায়োর করেন। এই মামলায় রাজু হলেন ৫৪ নং আসামী। তবে এই মামলায় অন্যান্যদের মাঝে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, নারায়ণগঞ্জের গডফাদার খ্যাত শামীম ওসমান, আজমেরী ওসমান, শামীম ওসমানের ছেলে ওয়ন ওসমানকেও আসামী করা হয়। রাজু সহ তার পরিবারের সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হলে আজমেরী ওসমান পরিবারের অনেক গোপন তথ্য বেরিয়ে আসবে। কিন্তু গত বছরের ৫ আগষ্টের পরে এই রাজু দেশের বাইরে গিয়ে নেপালে অনেক দিন অবস্থান করেন। তবে সম্প্রতি সময়ে তাকে ফতুল্লার যাত্রার মাঠ ইমোজি ফ্যাশনের পাশে শহিদ সাবের বাড়িতে দেখা গেছে বলে জানান একাধিক ব্যক্তি। সেখানে তার বোন ফাতেমা, তার ভাই সালাউদ্দিন, ফাতেমার স্বামী আশরাফ সহ তাদের পুরো পরিবার বসবাস করছে বলে জানান স্থানীয়রা।

পারভীন ওসমানের ঘনিষ্ঠ লোক হিসেবে পরিচিত হওয়ায় এই রাজু এলাকায় গড়ে তুলেছিলো ত্রাসের রাজত্ব। সে বক্তাবলীর দুনীতিতে অভিযুক্ত শওকত চেয়ারম্যানকে নিয়ে জায়গা জমিনের বিচার শালিস করতেন। পারভীন ওসমান আজমেরী ওসমানের নাম ভাঙ্গিয়ে এলাকায় বালু ব্যবসা,চাদাবাজী,লুটতরাজ চালিয়ে রাতারাতি বিপুল সম্পদের মালিক বনে যায় এই রাজু।

এলাকবাসি জানান, অবৈধ ব্যবসা,লুটপাট করে এলাকায় বহুতল ভবনের মালিক হয়েছে এই আজমেরী ওসমানের ক্যাশিয়ার সন্ত্রাসী রাজু। এছাড়াও বসুন্ধরায় ৬ নম্বার সেক্টরের নিরাপদ ব্যালীর ৭ম তলায় রয়েছে তার দুটি ফ্লাট। পূর্বাচলে প্রবাসী পল্লিতে ৫ টি প্লট রয়েছে রাজুর নামে। একই সাথে পূর্বাঞ্চলের র্জাউকের লেকপাড়ের পাশে নিরপাদ ভেলিতে প্লট রয়েছে। তার তেমন কোন ব্যবসা বানিজ্য নেই অথচ কোটি টাকার সম্পদ ঠিকই আছে। যা নিয়ে রীতিমত অবাক করার মত।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানায়, পারভীন ওসমান ও আওয়ামিলীগের প্রভাব দেখিয়ে চাদাবাজি,লুটপাট ও নানান ধরনের অবৈধ ব্যবসা চালাইতেন তিনি। বিশেষ করে বক্তাবলী ঘাটে ছিল তার বালুর ব্যবসা,কাশিপুর নরসিংপুর, বক্তাবলী গোপাল নগর এলাকার বিএনপি নেতাকর্মীদের জায়গা জমিন জোর করে দখল করে রাখতেন। পরে ভুক্তভোগিকে তা বিক্রি করতে বাধ্য করতেন। রাজুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তার নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।