নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, কামাল ভাই আমাকে অনেক আদর করত। আমি কখনও তাদের ভেতর অহংকার দেখিনি। আমরা কত গর্বিত একটা জাতি। আমরা কত বিনয়ী, বীর বাঙালি এটা ওটা, নিজেদের বেইমান বলি না কেন। আমরা বেইমানের জাতি। কে মেরেছে লোকটাকে। পাকিস্তান তো মারতে পারেনি। আমরা মেরেছি তাকে।
সোমবার (১৪ আগষ্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পঁচাত্তরের ১৫ আগষ্টের সকল শহীদদের স্মরণে আয়োজিত এক সভায় অংশ নিয়ে একথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, রাজনীতি করার দরকার নেই। দেশের জন্য কিছু করুন। ১৫ আগষ্ট হয়েছে, তার চেয়ে বড় ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। টার্গেট শুধু শেখ হাসিনা। বিএনপি জামায়াত নির্বাচন বন্ধ করতে চায়। ওরা মৌলবাদের উত্থান চায়। তখন মেয়েরা দেহ ব্যাবসা করবে আর গার্মেন্টস বন্ধ হয়ে গেলে পুরুষ শ্রমিকেরা আশেপাশের দেশে বোমা মারবে।
তিনি বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার অনেক স্মৃতি আছে। আমি যে বিশ্ববিদ্যালয় দেখেছি আপনারা যেন এমনটা না দেখেন আমি এ দোয়া করি। তখন বিশ্ববিদ্যালয় ছিল রণক্ষেত্র। জেল জুলুম তো ছিলই।
তিনি আরও বলেন, আজকের দিনের এ সময়েই ১৯৭৪ সালে আমার বড় ভাই নাসিম ওসমানের বিয়ে ছিল। আমি তখন পিচ্চি। শেখ কামাল ভাই আমাকে অনেক আদর করতেন। তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক নেতাই আমার বাড়িতে। আমি কামাল ভাইকে দেখেছি, একটা মানুষ কী পরিমান হাসতে পারে। আমার বাবা ও মায়ের সারা জীবন আফসোস ছিল। যদি এমনটা হত হয়ত সাথে সাথে প্রতিশোধ নিতে পারতাম। সেদিন রাতে কামাল ভাই বলল নাসিম চল নারায়ণগঞ্জে৷ পরদিন আমরা নারায়ণগঞ্জ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে আসবো। হঠাৎ তিনি মুড চেঞ্জ করলো যে আমরা যাবো না তুই কালকে নারায়ণগঞ্জ আসবি। এটাই আমার বাবা মায়ের আফসোস ছিল।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু মারা যাওয়ার পর আমি বলেছিলাম মা বঙ্গবন্ধু মানে যদি স্বাধীনতা হয় আমরা কী তাহলে এখন পরাধীন। হাতে লেখা পোস্টার নিয়ে নেমেছিলাম রাস্তায়। আমাকে পিটিয়ে অজ্ঞান করে ফেলেছিল। এরপর যে জ্ঞান ফিরল, তারপর আর পেছনে ফিরে তাকাইনি। আমাদের মনে হয়েছিল আমাদের ভবিষ্যতকে হত্যা করা হয়েছে। জিয়াউর রহমানকে আমরা পতাকা নিয়ে নারায়ণগঞ্জে ঢুকতে দেইনি। আমাদের সেই সাহস ছিল।
তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চুপ কেন। সাধারণ শিক্ষার্থীরা চুপ কেন আজকে। কেন আজ এমন ভাবে কথা বলা হয় যেন আমরা পরাধীন।
তিনি আরও বলেন, আপনাদের বলতে চাই জেগে উঠুন। আমি গণতন্ত্রের একটা সংজ্ঞায় বিশ্বাস করি। নায্যতার সংজ্ঞা। বঙ্গবন্ধু বলেছিল কেউ নায্য কথা বললে সে যদি একজনও হয় তাহলে তার কথা মেনে নেব। বিএনপি গণতান্ত্রিক দল না। যারা একুশে আগষ্ট গ্রেনেড হামলা করো তাদের সাথে কীসের গণতন্ত্র চর্চা। আফসোস আমার বয়স আপনাদের মত না। আমার শরীরে কুলায় না। সামনে আপনার দেশকে ধ্বংস করার খেলা হবে।
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...