এম এ মামুন বাবুল : যে জীবন জীবনের জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যেতে পারবে, সে জীবনে উন্নতির স্বর্ণ শিখরে আহরণ করতে পারবে। ঔপন্যাসিক আহমেদ রউফও একজন সংগ্রামী মানুষ। তাঁর লেখা আমি আগেও পড়েছি। আলোচনা করার মত সাহস হয়নি তখন। একুশে গ্রন্থমেলা ২০২০ এ প্রকাশিত উপন্যাস ‘পড়শি’ পড়ে লোভ সামলাতে পারলাম না। তাই দু-কলম লেখার চেষ্টা…
গ্রাম-নগর-শহর কেন্দ্রীক সহজ সরল মানুষের মুখচ্ছবিই যেন ‘পড়শি’ প্রেম দ্রোহ মানবতা ও সবুজ গ্রামের নদী সবুজ মাঠ এবং সেসব সহজ সরল মানুষের কথাই বলা হয়ছে সহজ সরল ভাষাশৈলির মধ্য দিয়ে। সংগ্রামী জীবনের নানা ঘাতপ্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিন তাঁর এ পথ চলা। প্রকৃতিপ্রেমি এই লেখক একজন পরপকারী ও মিষ্টিভাষী মানুষ।
গ্রামীণ সহজ সরল হতদরিদ্র ও মধ্যবিত্তদের জীবন কাহিনী সম্বলিত উপন্যাস ‘পড়শি’ বইটি একটি আধুনিক বিশ্বে যুগান্তকারী সৃজনশীল লেখা। ভ্রাতৃত্ববোধ-মমতাবোধ, পিতামাতার প্রতি দায়িত্ব কর্তব্য, স্বামী-স্ত্রীর গভীর ভালোবাসা, পাড়াপ্রতিবেশীর সম্পর্ক ফুটে উঠেছে এই লেখার মধ্য দিয়ে। গ্রামকেন্দ্রিক সহজ-সরল মানুষগুলোর চরিত্র অত্যন্ত চিরচেনা মনে হয়েছে আমার কাছে। প্রতিটি চরিত্রই যেন আমার কত চেনা। প্রিয় পাঠক আপনি পড়লেও আপনার সাথে গড়ে উঠবে নিবিড় সম্পর্ক পড়শি’র, আমার মনে হয় এখানেই একজন লেখকের প্রাপ্তি।
গ্রামে অতি সাধারণ একজন মানুষ, অথচ একে পর এক এগিয়ে আসে৷ মানুষের বিপদে আপদে। মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত মানুষের জীবন যাপনের টানা-পোড়েন, তাদের দৈনন্দিন চাহিদার কঠিন বাস্তবতা এবং প্রেম-বিরহিত নানা দৃশ্যপট ফুটে উঠেছে আহমেদ রউফ এর উপন্যাস পড়শিতে। এ ধরনের কাহিনী, চিত্রকল্প সামাজিক সভ্যতা ও পল্লীজীবন মানুষের অনুভূতি বারবার টেনে নিয়ে যাবে শেকড় থেকে শেকড়ের কাছে। বলা যায় আপনার আমার মূল শেকড় হল গ্রাম। যতই মানুষ নগর ও শহর কেন্দ্রীক হউক না কেন, তবুও প্রত্যেক মানুষের টান জন্মভূমি বা গ্রামের দিকে। সবার গায়ে হয়তো একটু আটট্টু ধুলোময়লা একদিন লেগেছিল গ্রামের। এ দৃশ্য কেউ কেউ মনে রাখে আবার কেউ কেউ ভুলে যায়। যেন আপনি গ্রামীণ মেঠোপথ সবুজ প্রকৃতি ও মানব জীবনের নানা বৈচিত্র্য ভুলে না যান, সে জন্য প্রয়োজন উপন্যাস ‘পড়শি’ বইটি সংগ্রহ করা। এ বইটি পড়লে হয়তো বা মনে পড়তে পারে পুরনো ছোট্টবেলার স্মৃতিসহ নানান ঘাতপ্রতিঘাতের দৃশ্য। লেখক, কথাশিল্পী, প্রকাশক, সম্পাদক আহমেদ রউফ-এর দীর্ঘদিন পথ চলা সূদুর প্রসারিত হউক, অগ্রসর হউক অন্ধকার জগৎকে আলোকিত করার লক্ষে। আমি তার ভবিষ্যৎ জীবনের দীর্ঘায়ু কামনা করছি।
লেখক-
এম এ মামুন বাবুল
শিক্ষক ও সাংবাদিক
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...