নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিন ধরেই। কিন্তু সম্প্রতি সময়ে তা আরো দৃশ্যমান হচ্ছে, ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের কমিটি গঠনের পর। একটি সূত্র জানাচ্ছে আগামী কিছুদিনের মধ্যেই গঠন হতে যাচ্ছে এনায়েতনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ড কমিটি। আর এ কমিটি নিয়ে তৃণমূল ত্যাগী নেতারা হতাশায় ভুগছেন।
কারণ সম্প্রতি সময়ে দলে ভেড়া ‘নব্য’ আওয়ামী লীগার বা হাইব্রিডদের নিয়ে এখন বিপাকে পড়েছে ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগ। এই নব্য আওয়ামী লীগারদের হাতে পুরনো আওয়ামী লীগাররা কোনঠাসা হচ্ছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে, নব গঠিত কমিটিগুলিতে পুরোনোদের জায়গা হয় না নব্যদের জয় জয়কার। এই ‘নব্য’ বলতে মূলত রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা অন্য দলের নেতাকর্মীরা যারা আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন তাদেরকে বোঝানো হয়েছে। অনেকে আবার সুযোগ-সুবিধার জন্য সরকারি দলে যুক্ত হয়েছেন। বলা হচ্ছে, এই নব্যদের কারণে এখন বিভিন্ন স্থানে পুরনো আওয়ামী লীগাররা কোণঠাসা হয়ে পড়েছে।
আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল আঁচ করতে পেরে ভোটের আগেই বিএনপি-জামায়াতের অনেকে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। আবার দল ভারী করতে অনেক আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও নেতা বিভিন্নভাবে অনেককে দলে যোগ দিতে বাধ্য করেছেন। এর ফলে তৃনমূলে বিএনপি-জামায়াতের অনেকেই এখন আওয়ামী লীগার হয়ে গেছেন।
আওয়ামী লীগ টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকায় স্থানীয় পর্যায়ে পরিস্থিতি এমন হয়ে গেছে যে, সবাই এখন আওয়ামী লীগার, অন্য দলের নেতাকর্মী খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছে না। অভিযোগ রয়েছে, এই নব্য আওয়ামী লীগারদের কাছে খাঁটি আওয়ামী লীগার ও এর বিভিন্ন অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা পাত্তাই পাচ্ছেন না, অথচ দূর্দিনে আন্দোলন সংগ্রামের সময় তৃনমূল নেতা কর্মিরা কত নির্যাতন সহ্য করেছে, মামলা হামলার শিকার হয়েছে।
গত বছর জানুয়ারিতে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারি একটি ঘটনা। সেখানে ছাত্রদলের রাজনীতি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা তানভীর আহমেদের লোকজন স্থানীয় যুবলীগ নেতার বাড়িতে হামলা চালায় বলে জানা যায়।
এছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে বহিরাগতরা আধিপত্য বিস্তার, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি ও ব্যাবসায়িক কারণে অনেকগুলো সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে। এ সব ঘটনা নিয়ে কেন্দ্রে অভিযোগও রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের এক নেতা জানান, ‘আমাদের এমপিকে ভুল বুঝিয়ে কিছু লোক বিএনপি-জামায়াতের লোকজনদের ও দলে ভিড়িয়েছেন। এ ধরনের কর্ম কারনো এমপির ভাবমূতি ক্ষুন্ন হচ্ছে তৃনমূলে। এখন এলাকায় নব্য আওয়ামী লীগরদের দাপট, বিভিন্ন কারণে কিছু লোক সবসময় সরকারি দলের হয়ে যান। তাদের কোনো আদর্শ নেই, দল নেই। এ সব সুবিধাভোগীদের কারণে ত্যাগী নেতাকর্মীরা কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন।’
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...