করোনা : শামীম ওসমানে পিছিয়ে আইভী
  1. rakibchowdhury877@gmail.com : Narayanganjer Kagoj : Narayanganjer Kagoj
  2. admin@narayanganjerkagoj.com : Narayanganjer Kagoj : Narayanganjer Kagoj
করোনা : শামীম ওসমানে পিছিয়ে আইভী
রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫, ০১:৩৫ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
পবিত্র ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানালেন মাসুকুল ইসলাম রাজীব পবিত্র ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানালেন মহসীন বেপারী জিয়ার শাহাদাত বার্ষিকীতে সিদ্ধিরগঞ্জে কৃষকদলের দোয়া মাহফিল পবিত্র ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানালেন শাহিন আহমেদ নিলয় পবিত্র ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানালেন রশিদ চেয়ারম্যান পবিত্র ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানালেন আক্তার হোসেন পবিত্র ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানালেন ফেরদৌস পারভেজ ডেনী পবিত্র ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানালেন মিজানুর রহমান মিজান পবিত্র ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানালেন রাশেদ বাবু আজমেরী ওসমানের ক্যাশিয়ার সন্ত্রাসী রাজুকে গ্রেপ্তারে বাধা কোথায় এতিমদের দোকান দখলের অভিযোগে আ’লীগ ক্যাডারের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন মশিউর রহমান রনির উদ্যোগে জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী পালন জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী আজ সিদ্ধিরগঞ্জে বৃদ্ধ নারী আটক, ১ কেজি গাঁজা উদ্ধার নারায়ণগঞ্জে বৈরী আবহাওয়ায় লঞ্চ চলাচল বন্ধ

করোনা : শামীম ওসমানে পিছিয়ে আইভী

তুষার আহমেদ, বিশেষ সংবাদদাতা
  • প্রকাশিত সময় : মঙ্গলবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২০
করোনা : শামীম ওসমানে পিছিয়ে আইভী

প্রাণঘাতী কোভিড-১৯ বা নভেল করোনা ভাইরাসের কবলে পড়েছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে রাজধানী ঢাকার নিকটবর্তী নারায়ণগঞ্জ জেলাকে করোনার হটস্পট বলে আখ্যায়িত করে আসছে আইইডিসিআর।

দেশে প্রথম তিন আক্রান্ত রোগির মধ্যে দুজনই ছিলেন নারায়ণগঞ্জের। সময়ক্রমে জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার ঢাকার পরে সবচেয়ে বেশি নারায়ণগঞ্জে। তাই এই জেলাটিই সর্বপ্রথম লকডাউন করেন প্রশাসন ও আইএসপিআর।

ফলে গোটা জেলায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে খেটে খাওয়া দিন মজুর থেকে শুরু করে চাকুরিজীবীরা। এমন পরিস্থিতিতে অসহায় মানুষদের পাশে এগিয়ে আসছেন অনেকেই। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের ভূমিকা প্রশংসনীয় হচ্ছে সর্বমহলে। নিজ তহবিল থেকে প্রায় কোটি টাকার (৯৯ লক্ষ ৯৯ হাজার ৯শত ৯৯টাকার) অনুদান ঘোষনা করেছেন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এই এমপি। ইতিমধ্যেই ওই অনুদানের অর্থ নিজ আসনের সংশ্লিষ্ট প্রশাসন, জেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ এবং জনপ্রতিনিধিদের আনুপাতিক হারে বন্টন করছেন তিনি। যা ইতিমধ্যেই বিতরণ করছেন জনপ্রতিনিধিরা।

শুধু তাই নয়, দিন দিন করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যুর ঘটনা বেড়ে চলায় নারায়ণগঞ্জবাসীর প্রাণের দাবি ছিলো নারায়ণগঞ্জে দ্রুত সময়ের মধ্যে করোনার পরীক্ষাগার (ল্যাব) স্থাপন করা। সেই দাবি ও পরিস্থিতি নিজ জ্ঞানে উপলব্ধি করেছেন শামীম ওসমান। তাইতো নারায়ণগঞ্জে ল্যাব স্থাপনের জন্য জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন এই নেতা।

শুধু কি তাই? জেলায় করোনা রোগি ছড়িয়ে পড়ায় তা রুখতে এবং করোনার নমুনা পরীক্ষা সহজ করতে নিজ উদ্যোগেই নমুনা সংগ্রহের ব্যবস্থা করেছেন শামীম ওসমান। এতে করে জেলায় নমুনা সংগ্রহের সংখ্যা তুলনা মূলক বেড়েছে। এছাড়াও নমুনা পরীক্ষায় আগের মত বেগ পেতে হচ্ছে না নারায়ণগঞ্জবাসীর।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ১৪ এপ্রিল থেকে নারায়ণগঞ্জে করোনার নমুনা সংগ্রহের কার্যক্রম শুরু হয়। এর পেছনের গল্পটা এমপি শামীম ওসমানের। মূলত তার হস্তক্ষেপে এই কার্যক্রম সম্পন্ন হয়।

সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে জেকেজি হেলথ কেয়ার নামের একটি বেসরকারী স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান উদ্যোগী হয়ে করোনা পরীক্ষার ল্যাবরেটরী স্থাপনের দায়িত্ব নিয়েছে। এর পেছনেও সাংসদ শামীম ওসমানের প্রচেষ্টা রয়েছে বলে জানা গেছে।

এ প্রসঙ্গে গত ১২ এপ্রিল এক ভিডিও বার্তায় শামীম ওসমান বলেছিলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে জরুরি ভিত্তিতে একটি করোনা পরীক্ষার ল্যাবরেটরী করতে আমরা অনুরোধ ও দাবী জানিয়েছিলাম। সেই অনুরোধে সাড়া দিয়ে মানবতার মা বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনতিবিলম্বে জেকেজি হেলথ কেয়ার সেন্টার নামের ওই বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দিয়েছেন।’

এছাড়াও গত রবিবার সন্ধ্যায় আরো এক ভিডিও বার্তায় নারায়ণগঞ্জে করোনা ভাইরাসের ভয়াবহতার কথা তুলে ধরে জেলায় করোনা আক্রান্তদের নমুনা সংগ্রহ ও তা পরীক্ষার জন্য ল্যাব স্থাপন করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের প্রতি অনুরোধ করেছিলেন শামীম ওসমান।

কার্যত এমপি শামীম ওসমানের প্রচেষ্টায় নারায়ণগঞ্জে করোনার নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষার ল্যাবরেটরী স্থাপন হচ্ছে বলে জানিয়েছন স্থানীয় বাসিন্দারা।

এদিকে, দুঃসময়ে সাংসদ শামীম ওসমানের এমন কার্যকরী উদ্যোগ ও বিরাট অনুদানের ভূয়সী প্রশংসা করছেন নারায়ণগঞ্জবাসী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই সাধুবাদ জানিয়ে বলছেন ‘দুঃসময়ে এমপি শামীম ওসমানের এই উদ্যোগ ও এগিয়ে আসা চিরদিন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে নারায়ণগঞ্জবাসী।’

অনেকের মন্তব্য ছিলো এমন- ‘নারায়ণগঞ্জের ইতিহাসের যেকোন ক্রান্তিকাল অথবা জনভোগান্তি লাঘবে শামীম ওসমান তথা ওসমান পরিবারের ভূমিকাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন ছিলো। আজও তাই হচ্ছে। ইতিপূর্বে নারায়ণগঞ্জের ডিএনডি প্রকল্পই এর জীবন্ত উদাহরণ।’

এদিকে এমন প্রসঙ্গে ঘুরে ফিরে আসছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর নাম। করোনা পরিস্থিতিতে এমপি শামীম ওসমানের ভূমিকার তুলনায় বেশ পিছিয়ে রয়েছেন মেয়র আইভী। তাকে মাঠে দেখা যাচ্ছে না। অথচ জেলায় মোট আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার বেশির ভাগই তার সিটি এলাকায়।

তাই অধিকাংশ ব্যক্তিই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিমত প্রকাশ করে বলছেন, ‘নারায়ণগঞ্জে করোনা সংকট মোকাবিলায় মেয়র আইভীর তুলনায় এমপি শামীম ওসমানের কার্যক্রম প্রসংশনীয়। শামীম ওসমান মানুষদের নিয়ে ভাবেন বলেই এমন উদ্যোগ নিয়েছেন এবং তার আসনের মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে শামীম ওসমানের প্রকাশ্য সমালোচনা ও বিরোধীতা করে আসলেও এই দুর্দিনে মানুষের পাশে নেই আইভী।’

অনুসন্ধানে জানা গেছে, দেশে করোনার উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে একমাস ৬ দিন হলো। এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যেও মেয়র আইভী তার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে মানুষের সহায়তায় এগিয়ে আসেননি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সরকারের পক্ষ থেকে আসা চাউল কাউন্সিলরদের মাধ্যমে বিলিয়েছেন মাত্র। কিন্তু সরকারের সেই অনুদান বিপুল সংখ্যক পরিবারের তুলনায় যথেষ্ট না হলেও নিজ তহবিল থেকে সহায়তা প্রদান করেনি মেয়র। উল্টো একটি বেসরকারী টেলিভিশনে ত্রান ও মানুষের আর্থিক অবস্থান নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে সিটি বাসির কঠোর সমালোচনার মুখে পরেন আইভী।

শুধু তাই নয়, নারায়ণগঞ্জে সর্বপ্রথম করোনায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের অধিনস্থ বন্দর উপজেলার রসুলবাগ এলাকায়। পরিস্থিতি মোকাবেলায় ওই এলাকা লকডাউন ঘোষণা করে প্রশাসন। হঠাৎ কর্মহীন হয়ে পরে গোটা এলাকার দিন মজুরেরা। কিন্তু ওই পরিস্থিতিতেও কর্মহীন দরিদ্রদের পাশে ব্যক্তিগত সহায়তা নিয়ে দাঁড়াতে দেখা যায়নি সিটি মেয়র আইভীকে।

সূত্রে জানা যায়, নমুনা সংগ্রহের জন্য সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকেও চিকিৎসকদের সমন্বয়ে বিভিন্ন ওয়ার্ডে স্বাস্থ্য টিম গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু চিকিৎসক ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের ঘাটতিতে সিটি করপোরেশনের সেই কার্যক্রম গতি হারিয়েছে। মেয়র হিসেবে এতেও কার্যকরি ব্যবস্থা বা তদারকি করতে দেখা যাচ্ছে না আইভীকে।

সূত্রে আরো জানা যায়, সর্বপ্রথম লকডাউন হওয়া রসুলবাগ এলাকায় নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সুফিয়ানের বসবাস। তিনি মেয়র আইভীর অতিঘনিষ্ঠ জন। তাইতো একজন ঠিকাদার হয়েও আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতার গোটা ১২ বছরের এই দীর্ঘ সময়জুড়ে সবচেয়ে বেশি সুবিধা ভোগ করেছেন এই ব্যক্তি। মেয়রের সাথে সখ্যতা গড়ে সাধারণ থেকে হয়ে উঠেছেন কোটিপতি! প্রভাবশালী মেয়রের বদান্যতায় হয়েছেন জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। কিন্তু প্রথম লকডাউনে পরা রসুলবাগ এলাকাবাসীর দুর্দিনে সহায়তার হাতটুকুও বাড়ায়নি সুবিধা ভোগী এই ব্যক্তি।

ফলে করোনা সংকটে এমপি শামীম ওসমান ও মেয়র আইভীর কর্মতৎপরতা তুলে ধরে সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বসবাসরত মাহমুদুল হাসান নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘মেয়র আইভী ও এমপি শামীম ওসমান উভয়ের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে মতবিরোধ লক্ষ করেছি। বিভিন্ন সভা-সমাবেশে আইভী শামীম ওসমানকে নিয়ে প্রকাশ্যে বিরোধীতাও করে থাকেন। মেয়র হিসেবে তিনি সিটি এলাকায় উন্নয়নের দাবী করেন বটে, তবে সিটি বাসীর এই দুঃসময়ে তিনি ব্যক্তিগত সাহায্য নিয়ে এগিয়ে আসেননি। তিনি যার বিরোধীতা ও যাকে বিতর্কিত করে আসছেন, সেই শামীম ওসমানই দুর্দিনে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগিতার হাত বাড়ালেন। এছাড়াও তিনি করোনা প্রতিরোধে বেশ কিছু কার্যকরি পদক্ষেপ নিয়েছেন। আমার বিশ^াস এতে করে শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জবাসীর মনে আরো বেশি জায়গা করে নিয়েছে।’

তাহলে করোনা সংকটে সিটি মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভীর অবস্থান কোথায় দাঁড়ালো ? এমন প্রশ্নের উত্তর প্রকাশ করতে রাজী নন সিটি করপোরেশনের এই নাগরি

নিউজটি শেয়ার করুন :

আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..