২০০৬ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভেন্যুর স্বীকৃতি পেয়েছে নারায়ণগঞ্জবাসীর স্বপ্নের ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়াম। ২৩ মার্চ বাংলাদেশ বনাম কেনিয়ার এক দিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে। একই বছরের ২৮ এপ্রিল বাংলাদেশ বনাম ভারতের একটি এক দিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচের মাধ্যমে শেষ হয় এর এক দিনের ম্যাচের ইতিহাস। ২০০৬ সালের ৯-১৩ এপ্রিল বাংলাদেশ বনাম অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার ম্যাচের মাধ্যমে শুরু হয় স্টেডিয়ামটির টেস্টের ইতিহাস। ২০১৫ সালের ১০-১৪ জুন বাংলাদেশ বনাম ভারতের টেস্ট ক্রিকেট খেলার মাধ্যমে শেষ হয় এই স্টেডিয়ামের টেস্ট ম্যাচের ইতিহাস। এখানে এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ মাঠে গড়ায়নি। নিয়মিত আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত না হওয়ায় মাঠটির নেই কোনো দেখভাল।
বর্তমানে মাঠের চারপাশ এবং স্টেডিয়ামে প্রবেশের রাস্তা দেখে এটিকে পরিত্যক্ত ডোবা বা খাল ভাবলেও ভুল হবে না। মাঠের চারদিকে পানিতে থৈথৈ। বৃষ্টি আর ডিএনডির কৃত্রিম পানিতে নষ্ট হচ্ছে মাঠটি। এতে করে হুমকির মুখে দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক এই ক্রিকেট ভেন্যুর ভবিষ্যৎ।
সরেজমিনে স্টেডিয়ামটির ভয়াবহ চিত্র দেখা গেছে। স্টেডিয়ামের লিংক রোড সংলগ্ন গেইট দিয়ে প্রবেশের শুরুতেই দেখা যায় ময়লার স্তুপ। লিংক রোড ও স্টেডিয়ামের মাঝে থাকা পানি নিষ্কাশনের ক্যানেলটি ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। পরিবেশ এমন যে বাইরে থেকে ভেতরে প্রবেশ করার সময় যে কারও কাছে মনে হবে এটি একটি পরিত্যাক্ত জায়গা। বাইরের অনুশীলন করার জায়গার অবস্থা আরও খারাপ। বৃষ্টির পানি ও ডিএনডি খালের মাধ্যমে বিভিন্ন শিল্প কারখানার রাসায়নিক মিশ্রিত পানিতে এই জায়গা এখন ডোবা-নালায় পরিণত হয়েছে।
মাসের পর মাস এভাবেই আটকে আছে পানি। এতে করে চরম দুর্গন্ধ তৈরি হয়েছে। আর জমে থাকা পানি এখন নানা পোকামাকড় আর মশার আতুর ঘরে পরিণত হয়েছে। ফলে নারায়ণগঞ্জবাসীর স্বপ্নের স্টেডিয়ামটির আন্তর্জাতিক ভেন্যুর মর্যাদা থাকবে কি না, তাই প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, মাঠটি নির্মাণের সময় বড় ধরনের ভুল করা হয়। মাঠের জায়গাটি এক সময় জলাভূমি ছিল। ডিএনডির ভয়ংকর জলাবদ্ধতার মধ্যে এটি পড়েছে। নির্মাণের সময় আশপাশে বসতবাড়ি বেশি না থাকলেও এখন বসতবাড়ির পাশাপাশি নির্মাণ করা হয়েছে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান। ফলে অন্যান্য জায়গা থেকে এটি নিচু হয়ে গেছে। এমন অবস্থায় যে ক্যানেল দিয়ে এই মাঠের পানি নিষ্কাশন হওয়ার কথা এখন সেটা দিয়েই বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে স্টেডিয়াম ও এর আশপাশের এলাকা।
এলাকাবাসীর দাবি যাতে দ্রুত স্টেডিয়ামের পাশে থাকা ময়লা অপসারণ ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হয়। এবং নিয়মিত আন্তর্জাতিক ম্যাচের আয়োজন করা হয়।
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...