নারায়ণগঞ্জের কাগজ : আগামী ৭ ডিসেম্বর ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। নামমাত্র এ কাউন্সিলে আবারো পুরোনো সেই সাইফুল্লাহ বাদল ও শওকত আলী নতুনভাবে নেতৃত্বে আসছে এটা অনেকাংশে নিশ্চিত। আর এ নিশ্চিতের রাজনীতিতে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হবে কাশিপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ।
২০০৪ সালে সাইফুল্লাহ বাদল থানা কমিটির সভাপতি হওয়ার পরে পুরো কাশিপুরে মাঠ পর্যায়ে এখনও পর্যন্ত আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করতে পারেনি। বরং নিজ বাড়ির সামনের কেন্দ্রে সংসদ নির্বাচনে শামীম ওসমানকে বিজয়ী করতে পারেনি এ নেতা দাবী তৃনমুলের। এমপি শামীম ওসমান তাকে বড়ভাইয়ের আসনে বসিয়ে দেয়ার পরে দলের নয় নিজের সুবিধা নিতেই সর্বদা তৎপর রয়েছে সাইফুল্লাহ বাদল এমন অভিমত কাশিপুর তৃনমুলের। কাশিপুর ইউনিয়ন নির্বাচিত সভাপতি মো.দুলাল হোসেনকে বাদ নিয়ে বিতর্কিত আইউব আলীকে তিনি ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বানিয়ে নেন দলের গঠনতন্ত্রকে উপেক্ষা করে।
শুধু তাই নয়, নির্বাচিত সভাপতির পরিবর্তে বিতর্কিত ভারপ্রাপ্ত সভাপতিকে দিয়ে দলের যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করেন এ নেতা। কাউন্সিলকে ঘিরে ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডেও কমিটি ঘোষনা দেন নির্বাচিত সভাপতি দুলালকে দুরে রেখে। আবার দলীয় গঠনতন্ত্রকে অনুসরন করে সভাপতি দুলাল হোসেনও ৯টি ওয়ার্ড কমিটি ঘোষনা দেন যা নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। আর এ বিতর্কের ঝড় থামাতে ২৯ নভেম্বর বক্তাবলী দিবমের অনুষ্ঠানে সাংসদ শামীম ওসমান থানা কমিটির সাধারন সম্পাদক এম.শওকত আলীকে নির্দেশ দেন দুলালকে নিয়ে বাদলের সাথে দ্বন্ধের বিরোধ মেটাতে। ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি দুলাল হোসেনও শওকত আলী ও বাদলের সাথে যোগাযোগ করেন এবং ৯টি ওয়ার্ডে দু’পক্ষের গঠনকৃত কমিটিও স্থগিত করেন যা কাউন্সিল শেষ হওয়ার পরে তা সমাধান করা হবে।
কাশিপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের পাল্টাপাল্টি কমিটি নিয়ে অদ্য মঙ্গলবারও কয়েকটি গনমাধ্যমে এম.সাইফুল্লাহ বাদলের একগেয়ামী বক্তব্য নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়। যেখানে বলা হয়েছে আইউব আলীর দেয়া কমিটিই বহাল থাকবে। তৃনমুলের বক্তব্য তাহলে কি সাংসদ শামীম ওসমানের মুখের কথার কোন মুল্য নেই বাদলের কাছে। যদি নির্বাচিত সভাপতি দুলাল হোসেনের গঠনতন্ত্র মেনে যে কমিটি করা হয়েছে সেটা না হয়ে অগঠনতন্ত্র মুলকভাবে গঠিত আইউব আলীর কমিটিকে ঘোষনা দেয়া তাহলে কাশিপুর আওয়ামীলীগের ত্যাগী পরীক্ষিত নেতা ও দলে অনুপ্রবেশকারী সুবিধাবাদীদের মধ্যে যদি সংঘর্ষ শুরু হয় এর দায়ভার কে নেবে এম.সাইফুল্লাহ বাদল নাকি সাংসদ শামীম ওসমান।
কাশিপুরে পাল্টাপাল্টি ওয়ার্ড কমিটির মধ্যে সাইফুল্লাহ বাদলের সোনারডিম হিসেবে পরিচিত আইউব আলী স্বাক্ষরিত কমিটিতে প্রায় ৪/৫টি ওয়ার্ডে সভাপতি-সাধারন সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে বিএনপি থেকে অনুপ্রবেশকারী নেতারা রয়েছে পক্ষান্তরে দুলাল হোসেনের দেয়া কমিটিতে প্রায় ২৫/৩০ বছর যাবত আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্তরা রয়েছেন যেখানে কোন অনুপ্রবেশকারী নেই। তবে তৃনমুলের দাবী যেহেতু কাউন্সিলের মাধ্যমে আবারো সাইফুল্লাহ বাদল সভাপতি হচ্ছেন সেক্ষেত্রে সোনারডিমের দেয়া কমিটিকেই বৈধতা দিবেন বাদল। কারন এখানে ওয়ার্ড কমিটিতে বিএনপির নেতাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে আওয়ামীলীগের ভাইটাল পদে আসীন করেছেন।
সাংসদ শামীম ওসমানকে উদ্দেশ্যে করে তৃনমুলের অনেক নেতাকর্মী বলেন, শুধু সাইফুল্লাহ বাদল কিন্তু কাশিপুরে একা আওয়ামীলীগার নয়। আমরা তৃনমুল যদি না থাকি তাহলে বাদল নয় আপনি নিজেও কাশিপুরে সমাবেশ করে সফলতার মুখ দেখবেননা। একটি মিছিল/মিটিং কিংবা সমাবেশ সফল করে তৃনমুলের নেতাকর্মীরা। সেখানে রাজপথ প্রকম্পিত করার জয়বাংলা-জয় বঙ্গবন্ধু শ্লোগানটি কিন্তু সাইফুল্লাহ ধরে না ধরেন এই তৃনমুলের নেতাকর্মীরা।
তারা আরো বলেন, এক বাদলে কিন্তু নৌকা ভাসাতে পারবেনা নৌকা ভাসাতে তৃনমুলের প্রয়োজন সবচেয়ে বেশী। আর সাইফুল্লাহ বাদল বঙ্গবন্ধু’র নৌকা থেকে তার আদর্শের যাত্রী নামিয়ে বিএনপি-জামাত জোটের যাত্রী তুলছেন নৌকা ফুটো করতে। এ কারনে যদি ভোটযুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্থ হন তাহলে আপনি শামীম ওসমান হবেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হবেন না। কারন এখানে নির্বাচন করবেন আপনি শেখ হাসিনা আপা নয়। এখনও সময় আছে কাশিপুর আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারীদের হোতা এম. সাইফুল্লাহ বাদলের বিষয়ে ভালভাবে জানুন এবং তার একগেয়েমী মনমানসিকতা থেকে বৃহত্তর আওয়ামী লীগকে রক্ষা করুন।
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...