নিজস্ব সংবাদদাতা : নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, আজ আমরা শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী ও শতবার্ষিকী পালন করছি। কিন্তু আমার প্রশ্ন হলো ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট যখন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল সেদিন আমরা কোথায় ছিলাম? কেনো আমরা সেদিন জেগে উঠতে পারি নাই? কেনো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা আন্দোলন করতে পারে নাই? আমরা তখন প্রস্তুত ছিলাম না। কারণ আমরা সেদিন বিশ্বাস করতে পারিনি যার গায়ে পাকিস্তানের মানুষরা স্পর্শ করতে পারেনি। যার ফাঁসির মঞ্চ পর্যন্ত পাকিস্তানে তৈরি করে মারতে সাহস পায়নি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য সেই মহান নেতাকে স্বাধীনতার সাড়ে ৩ বছরের মাথায় হত্যা করা হলো সপরিবারে। তাকে মারতে সেদিন আমেরিকা থেকে কোন সৈন্য সদস্য আসেনি। বঙ্গবন্ধুর বিশ্বস্ত খন্দকার মোস্তাক সেদিন পিছনের দরজা খুলে দিয়েছিলো বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার জন্য। রাজাকার যতটা না ভয়ংকর ছিলো তার চেয়ে বেশি ভয়ংকর ছিলো মোস্তাক। ‘বঙ্গবন্ধু উন্নয়ন দর্শন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে ‘বঙ্গবন্ধু উন্নয়ন দর্শন’ শীর্ষক আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা ও আতশবাজি অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শামীম ওসমান আরো বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান জানতেন এদেশে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। কিন্তু তিনি জানতেন না, তার স্ব-পরিবার সহ তাকে হত্যা করা হবে। আমরা কোন না কোন দেশের পন্থী কিন্তু আমাদের মহান নেতা জনগনের পন্থী ছিলেন তাই আমরাইতো তাকে মেরেছি। ওরা শেখ মুজিবকে হত্যা করে নাই আমাদের স্বপ্নকে মেরে ফেলেছিলো। আমরা শেখ হাসিনা, শেখ হাসিনা বলি কিন্তু তাকেও তো ২০ বার মারতে চেয়েছি। আমরা যারা রাজনীতি করি তাদের সাবধান হওয়া উচিত কারণ অনেকেই আমরা ন্যায্য কথা বলতে পারি না। যেদেশে খন্দকার মোস্তাকের জন্ম হয়েছে সেদেশে আমার ভয় লাগে। কারণ এদেশে দুই শ্রেণির লোক আছে বিশ্বাসঘাতক ও বিশ্বাসভাজন। বিশ্বাসভাজনরা অনেক নাটক করতে পারে তারা পিছন থেকে ছুড়ি মারে। আমাদের মাথার উপরে শকুনরা ঘুরছে। আরও একটি ১৫ আগস্ট করার জন্য। কিন্তু সেই ১৫ আগস্ট হবে শেখ হাসিনাকে হত্যা করার জন্য। কারণ ৯৬ পর্যন্ত শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের নেত্রী ছিলেন, কিন্তু এখন তিনি বাংলাদেশের নেত্রী।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন, আজকের এই অনুষ্ঠান বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা কীভাবে তৈরি হলো সেটা জানার জন্য। নতুন প্রজন্মকে জানতে হবে কীভাবে খোকা থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু হলো? এর কারণ হচ্ছে আমরা ‘বঙ্গবন্ধুর উন্নয়ন দর্শন শীর্ষক ২০৪১’ সালের মধ্যে তা বাস্তবায়ন করবো। আপনাদেরও ভালোবাসতে হবে। আমার জাতীয় পতাকাকে কোনো ঘাতক জাতে খামছে ধরতে না পারে সেদিকে আমাদেরকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদা বারিক বলেন, আমার বক্তব্য না, আমার কাজ হচ্ছে আজকের অনুষ্ঠান সফল করার। বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে জানানো এবং তাকে আমাদের হৃদয়ে ধারণ করার জন্য।
ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এম.এ মান্নানের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই, সাধারণ সম্পাদক এড. আবু হাসনাত মোঃ শহীদ বাদল। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি চন্দন শীল, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার চেয়ারম্যান এড. আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা মনির, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রফেসর এড. শিরিন বেগম, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নিজাম, ফতুল্লা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম. শওকত আলী, ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খন্দকার লুৎফর রহমান স্বপন, এনায়েতনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান, আলীরটেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতি, কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল আলম সেন্টু, জেলা যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন ভূইয়া সাজনু, জেলা সাবেক ছাত্রলীগের সভাপতি এহসানুল হক নিপু, নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস উপ-পরিচালক আরেফিন সিদ্দিকী, ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আসলাম হোসেন, বর্তমান জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আজিজুর রহমান আজিজ, সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম রাসেল, ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু মোঃ শরীফুল হক প্রমুখ।
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...